বলাৎকারের অভিযোগে জেলে থাকা মালয়েশিয়ার বিরোধী দলীয় নেতা আনোয়ার ইব্রাহিম চূড়ান্ত আপিলেও হেরে গেছেন। আজ বুধবার এ বিষয়ক মামলা থেকে মুক্তি চেয়ে তার করা আবেদনের ওপর শুনানি হয়। কিন্তু আদালত তার দাবি প্রত্যাখ্যান করায় তাকে জেলেই থাকতে হচ্ছে। খবর রয়টার্স'র।
শুনানিতে বলা হয়, ২০১৪ সালে আনোয়ার ইব্রাহিমকে অভিযুক্ত করে ৫ বছরের জেল দেয়া হয়। সেই মামলার রিভিউ চেয়ে আবেদন করেছিলেন তিনি। কিন্তু ৫ বিচারকের প্যানেল সর্বসম্মত রায়ে বলেছে, আনোয়ার ইব্রাহিমের ওই আবেদনের কোনো ‘মেরিট’ নেই। এটাই ছিল তার চূড়ান্ত আবেদন। এরপর আর এ মামলায় তিনি কোনো আবেদন করতে পারবেন না। ফলে সাজার বাহি ১৬ মাসও তাকে জেলেই কাটাতে হবে।
আজ বুধবার এ বিষয়ে ৬০ পৃষ্ঠার রায়ের অংশবিশেষ পড়ে শোনান মালয়েশিয়ার প্রধান বিচারপতি জুলকেফলি আহমেদ মাকিনুদিন।
উল্লেখ্য, আনোয়ার ইব্রাহিম এক সময় ক্ষমতাসীন দলের উদীয়মান তারকা রাজনীতিক ছিলেন। তিনটি বিরোধী রাজনৈতিক দলের জোট ২০১৩ সালের নির্বাচনে বিস্ময়কর সফলতা অর্জন করে। এ জন্য তাকে ক্ষমতাসীনদের জন্য হুমকি বলে মনে করা হয়। পরে সাবেক একজন সহকর্মীকে বলাৎকারের অভিযোগে তাকে অভিযুক্ত করে জেল দেয়া হয়। কিন্তু তার সমর্থকরা মনে করেন, তার রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শেষ করে দেয়ার জন্য রাজনৈতিক উদ্দেশে এ মামলা ও শাস্তি দেয়া হয়েছে।
মামলার রায়ের পর আনোয়ার ইব্রাহিম আদালতে সাংবাদিকদের বলেছেন, এটাই রাস্তার শেষ নয়। আমি বার বার বলবো আমি নিরপরাধ। কিন্তু বিচার বিভাগ আমার আবেদন অবজ্ঞা করেছে। স্বাধীনতার জন্য এ এক দীর্ঘ পথচলা।
উল্লেখ্য, ক্ষমতাসীন দলের সাবেক উপ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন আনোয়ার ইব্রাহিম। ১৯৯০র দশকের শেষের দিকে তখনকার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদের সঙ্গে তার দূরত্ব সৃষ্টি হলে তাকে বরখাস্ত করা হয়। এর পরপরই তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা শুরু হয়। তিনি বিভিন্ন রকম সমস্যায় আটকে যান। ওই সময় তিনি দুর্নীতি ও আত্মীয়করণের বিরুদ্ধে প্রচারণা চালিয়েছিলেন। তখন দেশব্যাপী তিনি সংস্কারবাদের নেতৃত্ব দেন। সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। এরপর তাকে ঘুষ গ্রহণ ও বলাৎকারের অভিযোগে প্রথমবার জেল দেয়া হয়।
বিডি প্রতিদিন/ ১৪ ডিসেম্বর ২০১৬/ এনায়েত করিম