কলেজের হোস্টেলে বিবাহিত নারীরা থাকলে অন্য নারীদের সমস্যা হয়, মনসংযোগ নষ্ট হয়-এই যুক্তি দেখিয়ে ভারতের তেলেঙ্গানা রাজ্য সরকারের সামাজিক কল্যাণ আবাসিক নারী ডিগ্রি কলেজগুলিতে ভর্তি হওয়ার জন্য একমাত্র অবিবাহিত নারী শিক্ষার্থীদেরই যোগ্য বলে গণ্য করা হচ্ছে।
সম্প্রতি তেলেঙ্গানা সোস্যাল ওয়েলফেয়ার রেসিডেন্সিয়াল এডুকেশন্যাল ইনস্টিটিউশন সোসাইটি থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে বিএ, বিকম, বিএসসি-পাঠ্যক্রমে প্রথম বর্ষে ভর্তির জন্য বিবাহিত নারী শিক্ষার্থীদের বিবেচনা করা হবে না। যার অর্থ অবিবাহিত নারী শিক্ষার্থীরাই সেখানে আবেদন করতে পারবেন।
রাজ্যটিতে এই ধরনের ২৩ টি ডিগ্রি কলেজ রয়েছে। যেখানে বর্তমানে পড়াশোনা করেন প্রায় ৪ হাজার নারী শিক্ষার্থী। এদের অনেকেই বিবাহিত। কিন্তু রাজ্য সরকারের ওই নতুন ঘোষণার ফলে বিপুল সংখ্যক নারী শিক্ষার্থী প্রবল চাপে পড়ে গেছেন।
রাজ্যের ওইসব কলেজগুলির হোস্টেলগুলির এক একটিতে ২৮০ জন নারী শিক্ষার্থী থাকতে পারেন। রাজ্য সরকার পরিচালিত ওইসব কলেজগুলিতে খাওয়া ও পড়াশোর জন্য কোনও খরচ লাগে না। কিন্তু ওইসব কলেজগুলির ৭৫ শতাংশ আসনই তপসিলি জাতির প্রার্থীদের জন্য সংরক্ষিত। বাকি ২৫ শতাংশ আসন সংরক্ষিত তপসিলি উপজাতি ও পিছিয়েপড়া শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য। ফলে ওইসব শ্রেণির যেসব নারী কষ্ট করে পড়াশোনার সুযোগ এতদিন পেতেন তারাও হয়তো থাকার সমস্যায় পড়াশোনা ছেড়ে দিতে বাধ্য হবে বলে মনে করা হচ্ছে।
এ ব্যপারে সোসাইটির কনটেন্ট ম্যানেজার বি. ভেনকট রাজু জানান ‘বিবাহিত নারী শিক্ষার্থীরা হোস্টেলে থাকলে তাদের সঙ্গে প্রতি সপ্তাহে বা ১৫ দিন পর পর দেখা করতে আসেন তাদের স্বামীরা। এতে হোস্টেলের অবিবাহিত নারীদের মনঃসংযোগে অসুবিধা হয়। তাই অবিবাহিত নারী শিক্ষার্থীরা যাতে পড়াশোনার দিক থেকে লক্ষ্য ভ্রষ্ট না হয়, সেই লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে’।
সোসাইটির সেক্রেটারি ড. আর.এস.প্রবীণ কুমার জানান ‘আমরা বিবাহিত নারী শিক্ষার্থীদের নিরুৎসাহিত করতে চাই না পাশাপাশি তারা যদি ভর্তির জন্য আর্জি জানান সেটাতেও বাধা দেওয়া হবে না। আসলে আমরা কাউকে অস্বীকারও করতে চাইনা বা কারও মনে আঘাত করতে চাই না’।