বিভেদ ভুলে ঐক্যের দিকে এগুচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের বহুল আলোচিত রাষ্ট্র ফিলিস্তিনের দুই প্রধান রাজনৈতিক শক্তি হামাস ও ফাতাহ। তিন বছরের ব্যবধানে হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজায় শান্তিপূর্ণভাবে মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার বৈঠক করেছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। গাজার নিয়ন্ত্রণ হামাসের হাত থেকে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে যাওয়ার ক্ষেত্রে এটাকে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা।
প্রধানমন্ত্রী রামি হামদাল্লাহ গত সোমবার মন্ত্রী ও সরকারি কর্মকর্তাদের একটি বহর নিয়ে গাজায় পৌঁছান। পরদিন মঙ্গলবার তিনি গাজায় মন্ত্রিসভার বৈঠক করেন। ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের গাজায় অবস্থিত দাপ্তরিক বাসভবনে এ বৈঠক হয়। বৈঠকে হামাসের কোনো অংশগ্রহণ না থাকলেও বৈঠকের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় তাদের উপস্থিতি ছিল। ২০১৪ সালে হামাস-ফাতাহ ঐক্যের সরকার গঠনে চুক্তিবদ্ধ হলেও পরের বছরই সেই চুক্তি ভেঙে যায় এবং এরপর থেকে গাজায় মন্ত্রিসভার কোনো বৈঠক হয়নি।
বৈঠকের উদ্বোধনী বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী হামদাল্লাহ বলেন, ‘বিভেদের পাতাটা উল্টে দিতে, জাতীয় কার্যক্রম সঠিক পথে পরিচালিত করতে এবং (ফিলিস্তিন) রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতেই আমরা এখানে এসেছি। ’ গাজাকে সঙ্গে নিয়ে ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘আজ আমরা এখানে এক ঐতিহাসিক পুনর্জাগরণের মুখোমুখি হয়েছি, যেখানে আমরা ক্ষতের উপশম ঘটাচ্ছি এবং আমাদের ঐক্য এগিয়ে নিচ্ছি। ’
প্রসঙ্গত, ২০০৬ সালের সাধারণ নির্বাচনের পর হামাস-ফাতাহ দ্বন্দ্বের জেরে গাজায় নিজেদের আলাদা ও একক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে হামাস। দুই পক্ষে দ্বন্দ্বের কারণে গোটা এক দশক ধরে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে গাজাবাসী।
মানবিক পরিস্থিতির চরম অবনতির মধ্যে প্রতিবেশী মিসরের চাপে গত মাসে হামাস ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতায় আগ্রহ দেখায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল গাজায় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের মন্ত্রিসভার বৈঠক করা সম্ভব হয়েছে।
ফাতাহ প্রধান আব্বাসের সরকারের সঙ্গে সমঝোতায় আগ্রহ দেখালেও নিজেদের সশস্ত্র বাহিনীকে বিলীন করে দিতে আপাতত মোটেই রাজি নয় হামাস। এ ছাড়া ইসরায়েলকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার ব্যাপারেও এই মুহূর্তে তাদের কোনো বক্তব্য নেই। হামাসের সশস্ত্র বাহিনী ও ইসরায়েল ইস্যু হামাস-ফাহাহ সমঝোতায় বাধা হয়ে দাঁড়াবে বলে বিশ্লেষকদের অভিমত। কেননা ওয়াশিংটন জানিয়েছে, ফিলিস্তিনের যেকোনো সরকারকে অবশ্যই ইসরায়েলকে স্বীকৃতি দিতে হবে এবং সহিংসতা পরিহার করতে হবে।
বিডি প্রতিদিন/ ০৪ সেপ্টেম্বর, ২০১৭/ ইমরান জাহান