আফগানিস্তান, ইরাকসহ একাধিক দেশে সন্ত্রাসবিরোধী লড়াইয়ে ব্যস্ত আমেরিকা। অভ্যন্তরীণ রাজনীতি ও অর্থনৈতিক সমস্যায় জর্জরিত এককালের দাপুটে রাশিয়া। সুনির্দিষ্ট রণকৌশল ও সাহসী পদক্ষেপ নেওয়ার অক্ষমতায় ভুগছে ভারতের মতো দেশ। ফলে এই মুহূর্তে একক শক্তির আসন কার্যত শূন্য। এবার এই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে আমেরিকার আসন টলানোর ছক কষছে চীন।
প্রাকৃতিক সম্পদের প্রাচুর্য্য, মানবসম্পদ ও বিদ্যুৎ গতিতে দৌড়তে থাকা অর্থনীতিতে ভর করে এমন পরিকল্পনাই করছেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। এমনটাই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
চীনা কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিসি) সাধারণ সম্পাদক হিসাবে দেশের প্রেসিডেন্ট পদে অভিষিক্ত হয়েছেন জিনপিং। দলের অভ্যন্তরে তার ক্ষমতা বাড়ছে উত্তরোত্তর। দ্বিতীয় দফায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়া প্রায় নিশ্চিত। এমনকী, নজিরবিহীনভাবে তিনি তৃতীয় দফাতেও শীর্ষ পদে আসীন হতে পারেন।
পাঁচ বছর অন্তর সিপিসি-র কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়। এবার জিনপিংয়ের মেয়াদ বৃদ্ধির পাশাপাশি, কেন্দ্রীয় স্তরের নতুন নেতাদেরও বেছে নেওয়া হবে। তার আগে বুধবার শীর্ষ নেতৃত্বের সামনে সাড়ে তিন ঘণ্টার দীর্ঘ বক্তব্য দেন জিনপিং। সেখানে সমাজতান্ত্রিক কাঠামো অক্ষুণ্ণ রেখে কীভাবে কমিউনিস্ট পার্টি পুনর্গঠন করা যায়, সে বিষয়েই অধিকাংশ সময় ব্যয় করেছেন। একই সঙ্গে লালফৌজকে বিশ্বের অন্যতম সেরা সেনাবাহিনী হিসাবে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন ৬৪ বছরের এই রাষ্ট্রনায়ক।
জিনপিং বলেন, আমাদের দল, আমাদের জনতা, আমাদের বাহিনী ও আমাদের দেশ নজিরবিহীন উন্নতি করেছে। কিন্তু জাতীয় পুনর্গঠনের লক্ষ্যে আমাদের আরও অনেক কাজ করতে হবে। এবার নিজেদের পরিবর্তিত করার সময় এসেছে। সমস্ত বিশ্বকে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামরিক দিশা দেখানোর জন্য তৈরি হতে হবে আমাদের।'
রাজনৈতিক মাপকাঠিতে আপাত নিরীহ মনে হলেও, চীনা প্রেসিডেন্টের বক্তব্যে বিশাল পরিকল্পনার আভাস পাচ্ছেন কূটনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। 'সুপার পাওয়ার' হিসেবে বিশ্বে নিজের দাপট বাড়ানোর নকশা তৈরি করে ফেলেছে চীন বলেই মনে করছেন তারা।
বিডি প্রতিদিন/১৯ অক্টোবর ২০১৭/আরাফাত