সৌদি আরব ইসরাইলের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ ও বিশ্বস্ত বন্ধু বলে মন্তব্য করেছে খোদ ইসরায়েলি একটি দৈনিক হারেতজ। সম্প্রতি কাতারের সঙ্গে সৌদি আরবের সম্পর্কের অবনতির পরিপ্রেক্ষিতে এমন মন্তব্য করল ইসরাইলি ওই সংবাদ মাধ্যম। বর্তমান সৌদি বাদশাহ সালমান সিংহাসনে বসার পর থেকে গত তিন বছরে সৌদি আরবের মধ্যপ্রাচ্য নীতি পর্যালোচনা করে সংবাদ মাধ্যমটি এমন মন্তব্য করেছে।
খবরে বলা হয়, গত বছরের জুনে যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান সৌদি সিংহাসনের উত্তরাধিকারি যুবরাজের পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই সৌদি আরব ইসরায়েলবিরোধী মুসলিম দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক কমিয়ে আনছে। আবার কিছু কিছু ক্ষেত্রে সম্পর্ক ছিন্ন করে ইসরায়েলের দিকে ঝুঁকে পড়েছে সৌদি আরব।
কাতারের সঙ্গে সৌদি আরবের উত্তেজনা সৃষ্টি হওয়ায় ইসরায়েল ব্যাপক খুশি হয়েছিল। সেই সাথে ইসরায়েল প্রকাশ্যেই সৌদির পক্ষে অবস্থান নেয়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, ইসরায়েল বহুদিন ধরে মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিম দেশগুলোকে একে অপরের বিরুদ্ধে দার করানোর চেষ্টা চালিয়ে আসছে। ইরান ও সৌদি আরব এবং কাতার ও সৌদি আরবের মধ্যে যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে তার পেছনেও বড় একটি কারণ হচ্ছে ইসরায়েলের প্ররোচনা। কারণ মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে যে কোনো উত্তেজনা ও দ্বন্দ্ব-সংঘাত ইসরায়েলের নিরাপত্তা ও স্বার্থই রক্ষা করবে।
এদিকে গত শনিবার থেকে সৌদি আরবের নেতৃত্বাধীন জোটভুক্ত চার দেশের পণ্যে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে কাতার। কাতারের ওপর সৌদি জোটের অবরোধ আরোপের এক বছরের মাথায় এই পাল্টা জবাব দিয়েছে দেশটি। কাতারের দোকানপাট থেকে সৌদি আরব, আমিরাত, বাহরাইন ও মিসরের পণ্য সরিয়ে ফেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দেশটির কর্তৃপক্ষ এ কথা জানিয়েছে।
কাতারের অর্থ মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করেছে। নির্দেশনায় সংশ্লিষ্ট তদারককারী কর্তৃপক্ষকে বলা হয়েছে, শনিবার থেকে তদারককারীরা দোকানপাট পরিদর্শন করে দেখবেন-ওই চারটি দেশের কোনো পণ্য রয়েছে কিনা।
উল্লেখ্য, গত বছর সৌদি জোটভুক্ত চারটি দেশ কাতারের বিরুদ্ধে অবরোধ আরোপ করে। কাতারের সঙ্গে একমাত্র স্থল সীমান্ত বন্ধ করে দেয় সৌদি আরব। অবরোধের পাশাপাশি কাতারের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করে সৌদি জোট। এর ফলে কুয়েত, ওমান হয়ে তুরস্ক ও ইরান থেকে পণ্য আমদানি করতে হয় কাতারকে। এই সংকট দূর করতে কাতারের পাশে এসে দাঁড়ায় তুরস্ক ও ইরান।
অন্যদিকে, সৌদি পণ্য রপ্তানির সুযোগ করে দিয়ে ইসরাইল সৌদি আরবের সঙ্গে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদার করতে চাইছে। পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এতে করে সৌদি কোম্পানিগুলো কিংবা সরকার হয়তো সাময়িকভাবে লাভবান হবে কিন্তু সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে ইসরায়েল। তাদের মতে, সৌদি-ইসরায়েল অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও সম্পর্ক পরবর্তীতে আরো ঘনিষ্ঠ রাজনৈতিক সম্পর্কে রূপ নেবে।
বিডি প্রতিদিন/২৮ মে ২০১৮/হিমেল