ভারতীয় জাল নোট পাচারের অপরাধে দুই তুর্কী নাগরিককে সাত বছরের সাজা দিয়েছে ভারতের আদালত। শুক্রবার দিল্লির সিবিআই’এর বিশেষ আদালত তাদের এই সাজা দেয়। পাচারের অর্থমূল্য ১.৫ কোটি রুপি। নিজেদের মার্সিডিজ বাসে ওই রুপি লুকিয়ে তারা তুর্কী থেকে বাংলাদেশ হয়ে ভারতে প্রবেশ করেছিল বলে জানিয়েছে ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই।
সিবিআই’এর মুখপাত্র আর. কে. গৌর জানান ‘ভুয়া ভারতীয় নোট থাকার কারণে দিল্লির বিশ্বাসনগরের কারকারদুমা আদালতের অ্যাডিশনাল শেসন জাজ হুসেন কোরোগুলু এবং মোহাম্মদ ইয়ামান নামে দুই তুর্কী নাগরিককে এবং তাদেরকে সহায়তা করার অপরাধে ভারতের উত্তরপ্রদেশের মুজাফফরনগরের বাসিন্দা মহম্মদ আনওয়ারকে সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। একইসঙ্গে তাদের প্রত্যেককেই ২ লাখ রুপি জরিমানাও করা হয়েছে’।
সিবিআই’এর মুখপাত্র আরও জানান ‘তুর্কী সরকারের নিবন্ধিত ৩৪ এলজেড ১৮৭ নম্বর মার্সিডিজ বাসটিকে ২০১১ সালে দিল্লিতে সিবিআই ও ডিরেক্টরেট অব রেডিভনিউ ইন্টেলিজেন্স (ডিআরআই) যৌথভাবে ওই বাসটির গতিপথ আটকায়। ওই বাসটির পিছনের চাকার কাছে কুলিং ইউনিটের ভিতর একটি কাগজে মোড়ানো ছিল ওই রুপির বান্ডিল। তাতে ভারতীয় ৫০০ রুপি নোটের প্রায় ১ কোটি ৫৪ লাখ রুপি ছিল। জানা যায় সরিষা রঙের কাগজের মোড়কে সম আয়তনের ছয়টি আয়তকার কাগজের বাক্সে ওই ভুয়া ভারতীয় রুপি ছিল’।
সিবিআই মুখপাত্র জানান ‘অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায় ওই মার্সিডিজ বাসটির মালিক ছিলেন তুর্কী নাগরিক হুসেন কোরোগুলু। সাথে ছিল তাঁরই সঙ্গী মোহাম্মদ ইয়ামান, তিনিই ওই বাসটিকে চালিয়ে তুর্কী থেকে পাকিস্তানে আনেন এরপর সেখান থেকে এসে পৌঁছায় বাংলাদেশে’।
অভিযোগ বাংলাদেশে পৌঁছোনোর পরই সেখান থেকে ভুয়া ভারতীয় নোট সংগ্রহ করে বাসের গোপন একটি স্থানে রেখে দেওয়া হয়। এরপর বাসটিকে নিয়ে পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে পশ্চিমবঙ্গে প্রবেশ করানো হয়। এরপর সেখান থেকে সড়ক পথে দিল্লির দিকে রওনা দেয় ওই বাসটি।
সিবিআই মুখপাত্র আর. কে. গৌর আরও জানান ‘ভারতে প্রবেশের পরই দুই তুর্কী নাগরিক পুরো রুপি তুলে দেন মহম্মদ আনওয়ার নামে উত্তরপ্রদেশের এক বাসিন্দার হাতে। মূলত আনওয়ারের নির্দেশেই ওই বিপুল পরিমাণ ভুয়া ভারতীয় রুপি ভারতে আসে। তার কাজ ছিল পুরো রুপি ভারতের বাজারে ছড়িয়ে দেওয়া। যদিও গোয়েন্দাদের তৎপরতায় তা সম্ভব হয়নি। ২০১১ সালের ৬ জুন ওই তিন অভিযুক্তকেই আটক করা হয় এবং তারপর থেকেই তারা জেল হেফাজতে ছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/২ জুন ২০১৮/হিমেল