সুন্নি অধ্যুষিত পাকিস্তানে সম্প্রতি শিয়া সম্প্রদায়ের লোকজন নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। যদিও দেশটিতে মানুষ নিখোঁজ হয়ে যাবার বিষয়টি বেশ স্পর্শকাতর। তারপরও সরকারি হিসেব বলছে, নিখোঁজ হয়ে যাওয়া প্রায় ১৫০০ ঘটনার কোন নিষ্পত্তি হয়নি এখনও।
পাকিস্তানের শিয়া অধিকার কর্মীদের তথ্য মতে, গোয়েন্দা সংস্থাগুলো তাদের উঠিয়ে নিয়ে গেছে বলে জানাচ্ছে নিখোঁজদের পরিবার। গত দুই বছর ধরে অন্তত ১৪০ জন শিয়া মতাবলম্বী নিখোঁজ হয়েছেন। ৩০ বছর বয়সী নাঈম হায়দার তাদের মধ্যে অন্যতম। হায়দারসহ নিখোঁজ ১৪০ জন শিয়া মতাবলম্বীর মধ্যে ২৫ জনই করাচির বাসিন্দা।
একটি মসজিদের ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরা থেকে নেয়া ছবিতে দেখা গেছে, হায়দারের দুই হাত পেছনে হাতকড়া লাগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে মুখোশ পরিহিত এবং পুলিশের পোশাক পরিহিত কয়েকজন। ২০১৬ সালের এ ঘটনার পর থেকে হায়দারের আর কোন খোঁজ নেই। ক্যামেরার ছবি থাকা সত্ত্বেও পুলিশ এবং অন্যান্য গোয়েন্দা সংস্থা আদালতে বলেছে যে, হায়দার তাদের হেফাজতে নেই।
হায়দারের পরিবার বলছে, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা রাতে তাকে উঠিয়ে নিয়ে গেছে। এছাড়া করাচি শহরের শিয়াদের পরিবারের সদস্যরা আরও অভিযোগ করেছেন, কেন তাদের পরিবারের সদস্যদের উঠিয়ে নেয়া হলো এবং তাদের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ? এসবের কিছুই জানেন না তারা।
তবে শিয়া সম্প্রদায়ের নেতারা বলছেন, যাদের উঠিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তারা সিরিয়ার একটি গোপন মিলিশিয়া দলের সদস্য বলে তাদের জানিয়েছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। এ গোপন মিলিশিয়া দলটির নাম যাইনাবাইয়ুন ব্রিগেড। ধারণা করা হচ্ছে, পাকিস্তানের প্রায় এক হাজার শিয়া এ মিলিশিয়া দলের সদস্য এবং তারা সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের পক্ষে লড়াই করছেন।
হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর নাতনী যাইনাব বিনতে আলী, যিনি শিয়া মতাদর্শের অনুসারী ছিলেন, তার নাম অনুসারে এ মিলিশিয়া দলটি গঠন করা হয়েছে। যাইনাব বিনতে আলীর মাজার রয়েছে সিরিয়ার রাজধানী দামেস্কে। মিলিশিয়া দলটির কাজ হলো সুন্নি উগ্রপন্থী ইসলামিক স্টেট গ্রুপ যাতে সে মাজারটির কোন ক্ষতি করতে না পারে। সূত্র: বিবিসি বাংলা
বিডি প্রতিদিন/০২ জুন ২০১৮/আরাফাত