গোরক্ষার অভিযোগ তুলে গণপিটুনির ঘটনা রোধে প্রয়োজনে ভারত সরকার আইন জারি করবে বলে জানিয়েছেন দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিং। মঙ্গলবার দেশটির সংসদে এই ইস্যুতে বিরোধীদের চাপের কাছে এই ঘোষণা দেন তিনি।
এদিন, লোকসভায় জিরো আওয়ারে জাতীয় কংগ্রেস, তৃণমূল ও সিপিআইএম-সহ বিরোধীদলগুলো গণপিটুনি ও তাতে মানুষের মৃত্যুর ঘটনায় তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করে এই ঘটনা রোধে কেন্দ্রীয় সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানাতে থাকে। একসময় হট্টগোল শুরু করে দেন, ওয়েলে নেমেও বিক্ষোভ দেখাতে থাকে তারা। এরপরই স্পিকার সুমিত্রা মহাজন কয়েকজন বিরোধী সাংসদদের এই বিষয়টি নিয়ে বলার অনুমতি দেন। বিরোধীদের উদ্বেগের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গণপিটুনির সমালোচনা করে জানান, সরকার এই বিষয়টি খুবই গুরুত্ব সহকারে দেখছে।
উল্লেখ্য, গত শনিবারই রাজস্থানের আলওয়ারে গরু পাচারকারী সন্দেহে ২৮ বছর বয়সী এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে মারার অভিযোগ ওঠে। এরপর সোমবারই গণসহিংসতা ও গণপিটুনির বিষয়টি দেখার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষে দুইটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠনের ঘোষণা দেওয়া হয়। যার একটির দায়িত্বে থাকবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী নিজে, অন্যটির দায়িত্বে থাকবেন দেশটির স্বরাষ্ট্র সচিব রাজীব গৌবা।
রাজনাথ সিং এদিন জানান, ‘গণপিটুনির ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর পদক্ষেপ নেবে এবং এই ঘটনা রোধে প্রয়োজনে আইনও জারি করা হবে’।
এদিকে, গোরক্ষার নামে দেশ জুড়ে যখন গণপিটুনির ঘটনা বেড়ে চলেছে তখনই বিতর্কিত মন্তব্য করে বসেন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ (আরএসএস) নেতা ইন্দ্রেশ কুমার। তাঁর দাবি, গরু জবাই বন্ধ হলেই গণপিটুনির ঘটনাও আপনাআপনি বন্ধ হয়ে যাবে। সোমবার দিল্লিতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘গণপিটুনির ঘটনায় যখন তীব্র নিন্দা করা হবে তখন এটাও মনে রাখতে হবে যে অনেক ধর্মেই গরু জবাইকে অনুমোদন করে না এবং তারা এটাকে পাপ বলেই মনে করে।
উল্লেখ্য, ভারতে ক্রমবর্ধমান গণপিটুনির ঘটনায় তীব্র উদ্বোগ প্রকাশ করেছেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী থেকে শুরু করে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। সংঘর্ষ বা গণপিটুনির নামে যে মানুষের প্রাণহানি ঘটছে, এই মুহূর্তে তা বন্ধ হওয়া উচিত বলে মনে করেন তাঁরা।
বিডি-প্রতিদিন/২৪ জুলাই, ২০১৮/মাহবুব