মেয়ের বিয়ে উপলক্ষে দীর্ঘ ২৮ বছর পর একমাসের জন্য প্যারোলে মুক্তি পেলেন ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর হত্যাকাণ্ডে জড়িত নলিনী শ্রীহরণ। ১৯৯১ সালের ২১ মে এক জনসভায় তামিল এলটিটিই আত্মঘাতী জঙ্গি হামলায় মারা গিয়েছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধী। এরপর এই মামলায় ৭ জনকে বন্দি করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে নলিনী অন্যতম।
রাজীব গান্ধীকে হত্যায় জড়িতদের আশ্রয় দেওয়ার অপরাধে নলিনী ও তার স্বামী মুরুগান গ্রেফতার হওয়ার পর জেলেই তাদের এক মেয়ের জন্ম হয়। ফলে চোখের সামনে মেয়েকে বড় হতে দেখার সৌভাগ্য হয়নি নলিনীর। মেয়ে এবার বিয়ের পীঁড়িতে বসতে যাচ্ছে। সেই বিয়ে উপলক্ষেই জেল থেকে প্যারোলে মুক্তি পেয়েছেন রাজীব গান্ধী হত্যাকাণ্ডে সাজাপ্রাপ্ত নলিনী শ্রীহরন।
গত ৫ জুলাই নলিনীর ১ মাসের জামিন মঞ্জুর করে মাদ্রাজ হাইকোর্ট। আজ বৃহস্পতিবার ভেলোর সেন্ট্রাল জেল থেকে মুক্তি পেয়েছেন নলিনী। তবে প্যারোলে মুক্তির জন্য শর্ত বেঁধে দিয়েছে আদালত। এই এক মাসে নলিনী কোনো রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে দেখা করতে পারবেন না, সংবাদমাধ্যমে কোনো সাক্ষাৎকার দিতে পারবেন না। এমনকি সোশ্যাল মিডিয়ায় কোনো পোস্ট দিতে পারবেন না তিনি।
উল্লেখ্য, নলিনীই হলেন ভারতের একমাত্র নারী কয়েদি যিনি টানা ২৮ বছর জেলে রয়েছেন। এত দীর্ঘ সময় কারাবাসের পর এই প্রথম টানা এতদিনের জন্য জেলের বাইরে পা রাখতে পারলেন তিনি। এই ৩০ দিন তাকে ভেলোরেই থাকতে হবে। তবে তার মেয়ের বিয়ের আয়োজন করা হয়েছে ভেলোর থেকে ১৪০ কিলোমিটার দূরে চেন্নাইয়ে। ভেলোরে তার সঙ্গে থাকবেন তার মেয়ে হরিথা শ্রীহরন, মা পদ্মাবতী ও বোন কল্যাণী। নলিনীকে চেন্নাইয়ের রেয়াপেথায় তার বাড়িতে যাওয়ার অনুমতি দেয়নি আদালত।
নলিনীকে ১৯৯১ সালে রাজীব গান্ধী হত্যাকাণ্ড মামলায় গ্রেফতার করা হয়। ভারতের টাডা আদালত ও সুপ্রিমকোর্ট তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। পরে তা মওকুফ করে যাবজ্জীবন দেয় তামিলনাড়ু সরকার। ২০১৬ সালে একবার বাবার মৃত্যুর সময়ে ১২ ঘণ্টার জন্য প্যারোলে মুক্তি পান নলিনী।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম
