বণিক বার্তার সূত্র ধরে শনিবার (১৪ জুন) বাংলাদেশ প্রতিদিনে ‘সরকারি অর্থে হজে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মালি, চালক, গানম্যান ও পিয়ন, নির্দেশনা না মেনে সফরসঙ্গী উপদেষ্টার স্ত্রী ও দুই বোন’ শিরোনামে একটি খবর প্রকাশিত হয়। এই খবরটির ব্যাখ্যা দিয়েছে মন্ত্রণালয়।
ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, এরূপ শিরোনাম করাটা দুঃখজনক ও নিতান্তই উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। সরকারি মাধ্যমে আগত হজযাত্রীদের সেবা ও হজ ব্যবস্থাপনার স্বার্থে 'হজ ও উমরাহ ব্যবস্থাপনা বিধিমালা, ২০২২' এর আলোকে সুনির্দিষ্ট দায়িত্ব পালনের জন্যই ধর্ম মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন শ্রেণির কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সৌদি আরবে প্রেরণ করা হয়েছে।
হজ ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং একটি বিষয়। এ চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় মন্ত্রণালয়ের সকল স্তরের কর্মকর্তাদেরকে একটি টিম স্পিরিট নিয়ে কাজ করার প্রয়োজন হয়। ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অফিস সহকারী ও কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক, ব্যক্তিগত কর্মকর্তা, অফিস সহায়ক, গানম্যান, ড্রাইভার, মালী তথা সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীর অক্লান্ত পরিশ্রমের কারণেই হজের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়ে থাকে।
ব্যাখ্যায় আরও বলা হয়েছে, সরকারি ব্যয়ে সফরসঙ্গী করার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের একটি পরিপত্র আছে, এটি সত্য। মূলত সরকারি অর্থ সাশ্রয়ের জন্যই এরূপ পরিপত্র জারি করা হয়েছে। ধর্ম উপদেষ্টার স্ত্রী ও দুই বোন তাদের নিজ খরচে হজব্রত পালনের জন্য সৌদি আরব এসেছেন। তাদের টাকা জমাদানের প্রমাণক মন্ত্রণালয়ে সংরক্ষিত আছে। এ সংক্রান্ত আদেশও সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদককে সরবরাহ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, তাদের সাথে অন্য কোন মাহরাম পুরুষ না থাকায় ধর্ম উপদেষ্টা তাদের মাহরাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।
নাম-পরিচয় প্রকাশ না করে খাতসংশ্লিষ্ট হিসেবে আখ্যা দিয়ে উদ্ধৃত করা হয়েছে যে, 'যেসব কারণে মন্ত্রণালয়ের খরচে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের হজ টিমের সদস্য করা হয়, সৌদি সরকার সে সেবাগুলো দিয়ে থাকে। এজন্য সরকার আলাদা চার্জও নেয়।' এ ধরনের মন্তব্য একেবারেই ভিত্তিহীন ও কল্পনাপ্রসূত।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামানকে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, ‘সৌদি সরকারের হজের প্যাকেজের মধ্যেই হাজিদের সব ধরনের সেবা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি থাকে। তাদের চিকিৎসা, হারিয়ে গেলে ঠিকানা খুঁজে দেওয়া-সহ সবকিছুই সৌদি সরকারের হজের প্যাকেজের অন্তর্ভুক্ত থাকে।’ এ বক্তব্যও নিছক মনগড়া ও কল্পনাপ্রসূত। তাঁর বক্তব্যের স্বপক্ষে তিনি কোনো প্রমাণক মন্ত্রণালয়কে দিতে পারেননি।
প্রকৃতপক্ষে, এবছরের সার্বিক হজ ব্যবস্থাপনা বিগত বছরগুলোর তুলনায় সুন্দর ও সাবলীল হয়েছে। হজ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন স্টেকহোল্ডাররা, বিশেষ করে হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) এর দায়িত্বে নিয়োজিত নেতৃবৃন্দ ও গণমাধ্যমসমূহ এবছরের হজ ব্যবস্থাপনার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন। ধর্ম মন্ত্রণালয় তথা সরকারের এ সাফল্যে ঈর্ষান্বিত হয়েই কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী এরূপ ভিত্তিহীন ও কল্পনাপ্রসূত সংবাদ প্রকাশ করে সরকার ও দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করার অপপ্রয়াস চালাচ্ছে বলে ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয় মনে করে।
বিডি প্রতিদিন/মুসা