রাশিয়া থেকে কেনা অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘এস-৪০০’নিয়ে তুরস্ককে কঠোর বার্তা দিল যুক্তরাষ্ট্র। অত্যাধুনিক এই ক্ষেপনাস্ত্র অপারেশনে না নামাতে (সক্রিয় না করতে) তুরস্কের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তাদের ন্যাটো মিত্র যুক্তরাষ্ট্র।
অন্যথায় আঙ্কারার ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ হতে পারে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে ওয়াশিংটন।
তুরস্কে রাশিয়ার ‘এস-৪০০’ সমরাস্ত্রের প্রথম দফা চালান প্রেরণ বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) শেষ হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইকেল পম্পেও ব্লুমবার্গ টেলিভিশনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ হুঁশিয়ারি-বার্তা দেন। রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সমরাস্ত্র বিক্রয় বিভাগের প্রধান আলেক্সান্দর মিখেয়েভ বৃহস্পতিবার জানান, চুক্তি অনুসারে প্রথম ধাপে রাশিয়া ৩০টি বিশেষ ফ্লাইটে ‘এস-৪০০’ পাঠিয়েছে তুরস্কে।
পম্পেও বলেন, সামনে আরও নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে, তবে আমরা স্বাভাবিকভাবেই চাই যে, ‘এস-৪০০’ যেন অপারেশনাল (সক্রিয় করা) না হয়।
রুশ ‘এস-৪০০’ ক্ষেপণাস্ত্র আকাশপথের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করে। ভূমি থেকে আকাশে উৎক্ষেপণের এই ক্ষেপণাস্ত্রের আওতা প্রায় ৪০০ কিলোমিটার। এটি একই সময়ে ৮০টি লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে। স্বল্প উচ্চতার ড্রোন থেকে শুরু করে যেকোনো উচ্চতায় যুদ্ধবিমান এবং দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্রে আঘাত হানতে সক্ষম ‘এস-৪০০’। এই প্রযুক্তির প্রতি ইউনিটে থাকে নয়টি করে লঞ্চার (যেখান থেকে ছোড়া হয়), ১২০টি করে ক্ষেপণাস্ত্র এবং কমান্ড ও সাপোর্টের জন্য সরঞ্জাম ও বাহন।
নিজেদের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা আরও শক্তিশালী করতেই ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে রাশিয়ার কাছ থেকে এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র কেনার চুক্তি করে তুরস্ক। এ জন্য মস্কোকে বড় অংকের অর্থও পরিশোধ করেছে তারা।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের ধারণা, এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা নিজেদের এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানের জন্য বড় হুমকি। তাই উত্তর আটলান্টিক নিরাপত্তা জোটের (ন্যাটো) অন্যতম সদস্য তুরস্ককে ‘এস-৪০০’ কিনতে বরাবরই নিষেধ করে আসছিল যুক্তরাষ্ট্র। এ নিষেধাজ্ঞা পরোয়া না করায় হুঁশিয়ারিও দিয়ে আসছিল ওয়াশিংটন। তুরস্ক যদি ‘এস-৪০০’ চুক্তি বাতিল না করে, তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের ‘এফ-৩৫’ ক্রয় ও উৎপাদন সংক্রান্ত সব কার্যক্রম বাতিল হয়ে যাবে বলেও হুমকি দিয়েছিল তারা।
এসব হুঁশিয়ারি-হুমকিকে পাত্তা না দিয়েই তুরস্ক ‘এস-৪০০’ প্রথম ধাপে গ্রহণ শেষ করায় সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ উপদেষ্টা বলে পরিচিত সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম সম্প্রতি বলেন, মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এড়াতে এবং সম্ভাব্য মুক্তবাণিজ্য চুক্তি সইয়ের সুযোগ পেতে তুরস্ককে ‘এস-৪০০’ সক্রিয় করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
কিন্তু এ বিষয়ে ব্লুমবার্গ টেলিভিশনের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে কোনো মন্তব্য করেননি পম্পেও।
বিডি প্রতিদিন/কালাম