২০১৭ সালের ২ নভেম্বর কোচি থেকে সিঙ্গাপুরগামী বিমানে উঠেছিলেন এক ভারতীয়। বিমান সিঙ্গাপুরে পৌঁছনোর পর অভিযোগ ওঠে, তিনি এক বিমানসেবিকার শ্লীলতাহানি করেছেন। সেই নিয়ে মামলা চলছিল প্রায় দু’বছর। সোমবার সিঙ্গাপুরের আদালতে প্রমাণিত হয়েছে, ওই ভারতীয় নাগরিক সত্যিই বিমানসেবিকার শ্লীলতাহানি করেছেন। অপরাধীর নাম বিজয়ন মথন গোপাল (৩৯)। তিনি সিঙ্গাপুরের বাসিন্দা। খবর দ্য ওয়ালের।
গতকাল সোমবার সিঙ্গাপুরের সংশ্লিষ্ট আদালতের জজ সালিনা ইশাক বিজয়নকে দোষী সাব্যস্ত করেন। তবে এখনও তার শাস্তি ঘোষিত হয়নি। আইন ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, সিঙ্গাপুরের আইনে অপরাধী বিজয়ন মথন গোপালকে অন্তত দু’বছর পর্যন্ত জেল, জরিমানা ও বেত মারার শাস্তি দেওয়া হতে পারে।
জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২ নভেম্বর স্কুট এয়ারলাইন্সের বিমানে উঠেছিলেন। অভিযোগকারী বিমানসেবিকা আদালতে বলেছেন, অপরাধী সেদিন বিমানে ওঠেন সকলের শেষে। তার শরীর থেকে অ্যালকোহলের গন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। কোনও রকমে তিনি নিজের আসন পর্যন্ত হেঁটে যান। বিমান সেবিকার হাতে নিজের বোর্ডিং পাসটি দেন। বিমান ওড়ার পরেই অভিযোগকারী দেখতে পান, ওই যাত্রীর সঙ্গে আর এক স্টুয়ার্ডেসের ঝগড়া শুরু হয়েছে। তিনি কাছে গিয়ে জানতে পারেন, বিজয়ন খাবার ও রেড ওয়াইন আনার অর্ডার দিয়েছেন কিন্তু তার দাম দিতে চাইছেন না। তখন অভিযোগকারী বিজয়নকে শান্ত করার জন্য বলেন, ঠিক আছে, আপনাকে আগে খাবার ও পানীয় সরবরাহ করা হবে। পরে আপনি দাম দেবেন। কিন্তু বিজয়ন বলেন, তিনি এই প্লেনে কিছু খাবেন না। কারণ তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করা হয়েছে।
ওই সময় বিমানে এক যাত্রী অক্সিজেনের অভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। অভিযোগকারী তাকে দেখতে যান। বিজয়ন ঘন ঘন কল লাইট বাটন টিপে তাকে ডাকতে থাকেন। ইতোমধ্যে অসুস্থ যাত্রীর কাছে এক নার্স আসেন। অভিযোগকারী ফের আসেন বিজয়নের কাছে। তখনই ওই যাত্রী বিমানসেবিকাকে অশালীনভাবে স্পর্শ করেন। বিমানসেবিকা আপত্তি করলে বিজয়ন চিৎকার করে বলেন, আই অ্যাম দ্য বস অব দ্য ফ্লাইট! স্টুয়ার্ডেস বিমানের ক্যাপ্টেনকে বিষয়টি জানানো হয়। একইসঙ্গে বিমান সিঙ্গাপুরে নামা মাত্র স্কুট এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ ও এয়ারপোর্ট পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানো হয়। বিজয়ন পালটা বলেন, তিনিই বিমানের খারাপ পরিসেবার জন্য ওই স্টুয়ার্ডেসের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতে যাচ্ছিলেন। সেই অভিযোগ চাপা দেওয়ার জন্য বিমানসেবিকা শ্লীলতাহানির কথা বলছেন।
বিডি-প্রতিদিন/শফিক