আইআরজিসি’র কুদস ফোর্সের কমান্ডার লে. জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যার ঘটনায় আমেরিকার বিরুদ্ধে চরম প্রতিশোধ নেয়ার অঙ্গীকার করে ইরান। ইরানের এমন হুমকির জবাবে দেশটির ৫২টি কালচারাল সাইটে হামলার পালটা হুমকি দিয়ে বিপাকে পড়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
ট্রাম্প গত শনিবার বলেছিলেন, ‘সোলাইমানি হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক বা সম্পদের ওপর হামলা হলে ইরানের সংস্কৃতির জন্য গুরুত্ব বহন করে এমন জায়গাতে ‘খুব দ্রুত ও বিধ্বংসী’ হামলা চালানো হবে।’ পরদিন রবিবার ওই হুমকির পুনরাবৃত্তি করে ট্রাম্প টুইট বার্তায় বলেন, ‘যদি ওরা মার্কিন নাগরিকদের হত্যা করে, নির্যাতন করে, রাস্তার ধারে বোমা মেরে মার্কিনীদের উড়িয়ে দেয়, তাহলে আমরা কেন ওদের সাংস্কৃতিক স্থাপনায় হামলা চালাতে পারবো না?’
ট্রাম্পের এমন হুমকির পর সমালোচনায় পড়েন তিনি। কেননা ইরানের ওইসব সাইট যুদ্ধকালীন সময়েও রক্ষা করতে হবে এমন চুক্তি করা হয়। যুদ্ধকালীন সময়ে ওইসব অঞ্চলে হামলা করা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের শামিল। জাতিসংঘের কালচারাল সংস্থার ডিরেক্টর জেনারেল অড্রে অজৌলে বলেন, ইরান এবং যুক্তরাষ্ট্র উভয়ই ১৯৭২ সালে এক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। যাতে বলা হয়েছিল যুদ্ধকালীন সময়ে ওইসব সাইটে হামলা করা যাবে না।
ডেমোক্রেটিক সিনেটর এলিজাবেথ ওমর ও ক্রিস মারফি বলেন, ট্রাম্পের এমন হুমকি যুদ্ধের ন্যায় অপরাধ। এছাড়া ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভিদ জারিফও একই মন্তব্য করেছেন। অন্যদিকে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডমিক রাব সোমবার বলেন, আন্তর্জাতিক আইনের মাধ্যমে কালচারাল সাইট রক্ষা করা হয় এবং ব্রিটেন তা সম্মান করে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এক বিবৃতিতে জানায়, যুদ্ধ সম্পর্কিত জেনেভা কনভেনশন, তার ৫৩ ধারার বলা হয়েছে- ‘কোনো ধরনের সাংস্কৃতিক স্থাপনায় হামলা একেবারেই নিষিদ্ধ।’ এরপর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যদি এই কাজ করেন, সেটা হবে যুদ্ধাপরাধের সামিল।
এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রে ডেমোক্রেট দলের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা, সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন বলেন, ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আসলে যুদ্ধাপরাধ করার হুমকি দিচ্ছেন।’
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার