শিরোনাম
১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ১২:১৭

দুর্বিষহ জীবন, সেই সাংবাদিকরা এখন নির্মাণশ্রমিক-দিনমজুর!

অনলাইন ডেস্ক

দুর্বিষহ জীবন, সেই সাংবাদিকরা এখন নির্মাণশ্রমিক-দিনমজুর!

কাশ্মীর বিশ্বব্যাপী একটি আলোচিত নাম। সম্প্রতি আরও আলোচনায় আসে ভারত সরকারের কর্মকাণ্ডে। নরেন্দ্র মোদি সরকার ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা তুলে নেওয়ার পর বদলে গেছে সেখানকার সাংবাদিকতার চিত্র। 

এখন আহার জোগাতে সাংবাদিকতা ছেড়ে তাদের কেউ কেউ নির্মাণ শ্রমিক আর দিনমজুরের পেশা বেছে নিয়েছেন।

বিবিসির একটি প্রতিবেদনে উঠে এসেছে জম্মু-কাশ্মীরের সাংবাদিকদের এমন দুর্বিষহ জীবনের চিত্র।

পাঁচ বছর ধরে ফটো সাংবাদিক হিসেবে কাজ করে আসছিলেন মুনীব-উল ইসলাম (২৯)। ভারত এবং দেশের বাইরের কয়েকটি গণমাধ্যমে তার ছবিও ছাপানো হয়েছে।

কিন্তু গত বছরের আগস্টে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার কাশ্মীরে ল্যান্ডফোন, মোবাইল এবং ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দিলে রাতারাতি এই তরুণ ফটো সাংবাদিকের স্বপ্নের চাকরি হাওয়ায় উবে যায়।

বিজেপি সরকারের বিতর্কিত এই সিদ্ধান্ত মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এই উপত্যকাকে বৈশ্বিক সংবাদে নিয়ে আসে। কিন্তু সেখানে কী ঘটছে সে প্রতিবেদন লেখার কোনও উপায় নেই স্থানীয় সাংবাদিকদের। আরও খারাপ বিষয়ে হল- সাংবাদিকতা করে বেতন না পেয়ে তাদেরকে এখন অন্য কাজ করতে হচ্ছে।

জানুয়ারিতে ১৫০ দিনেরও বেশি সময় পর ইন্টারনেট নিষেধাজ্ঞা কিছুটা শিথিল করা হয়। এটা ভারতের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ মেয়াদি নিষেধাজ্ঞা।

সীমিত আকারে ব্রডব্যান্ড এবং টু-জি চালু হয়েছে জম্মু অঞ্চলের কিছু অংশে। কিন্তু মোবাইল ইন্টারনেট এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম অনেকাংশেই এখনও বন্ধ রয়েছে।

মুনীব-উল ইসলাম বলেন, ‘আমি সাংবাদিকতাকে বেছে নিয়েছি, কারণ আমি আমার জনগণের জন্য কিছু করতে চাই। কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেওয়ায় থেমে যাওয়া আমার এই যাত্রার আগ পর্যন্ত আমি সংঘাত প্রবণ এই অঞ্চলের সংবাদ সংগ্রহে নিজেকে আন্তরিকতার সঙ্গেই নিয়োগ করেছিলাম।’

গত সেপ্টেম্বরে একটি প্রতিবেদনের জন্য তথ্য সংগ্রহে নিজের পকেট থেকে ৬ হাজার রুপি খরচ করে রাজধানী শ্রীনগরে গিয়েছিলেন মুনীব-উল ইসলাম। কিন্তু দ্রুত এই টাকা ফুরিয়ে গেলে তাকে থামতে হয়।

অর্থের খোঁজে এই সাংবাদিক এখন মরিয়া, কারণ তার স্ত্রী অসুস্থ। শেষ পর্যন্ত ভাইয়ের দ্বারস্থ হন তিনি। পার্শ্ববর্তী অনন্তনাগ শহরে একটি নির্মাণাধীন ভবনে ইট বহনের কাজ পাইয়ে দেন ভাই। মজুরি হিসেবে প্রতিদিন ৫০০ রুপি পাচ্ছেন এখন।

কাশ্মীরে মুনীব-উল ইসলামই একমাত্র সাংবাদিক নন। আরও অনেককেই সাংবাদিকতা ছেড়ে অন্য পেশায় যেতে বাধ্য হচ্ছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক সাংবাদিক বলেন, তিনি কয়েক বছর ধরে রিপোর্টার হিসেবে কাজ করছিলেন। কিন্তু গত আগস্টে চাকরি ছেড়ে চলে গেছেন। তিনি এখন একটি দুগ্ধ খামারে কাজ করার পরিকল্পনা করছেন। সূত্র: বিবিসি

বিডি প্রতিদিন/কালাম

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর