১৯ জানুয়ারি, ২০২২ ০৭:৫১

কেন আমিরাতে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাল ইয়েমেনিরা?

অনলাইন ডেস্ক

কেন আমিরাতে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাল ইয়েমেনিরা?

ফাইল ছবি

ইয়েমেনের সেনাবাহিনী সোমবার সংযুক্ত আরব আমিরাতে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে বড় ধরনের হামলা চালায়। এই হামলায় ২০টি ড্রোন ও ১০টি ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করা হয়। আমিরাতের গভীরে ইয়েমেনি সেনাদের এই হামলায় অন্তত তিনজন নিহত এবং ছয়জন আহত হয়।

এছাড়া ইয়েমেনের দক্ষিণে অবস্থিত শাবওয়া প্রদেশের আতাক বিমান বন্দরে আমিরাতের মালিকানাধীন একটি সামরিক পরিবহনও বিমান হামলার শিকার হয়েছে। আল মিয়াদিন টিভি চ্যানেল জানিয়েছে, আমিরাতের ওই সামরিক পরিবহন বিমানটি সামরিক সরঞ্জাম নিয়ে ওই বিমান বন্দর থেকে যুদ্ধের ময়দানে যাচ্ছিল যেখানে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট ইয়েমেনিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত। আমিরাতের বিরুদ্ধে ইয়েমেনিদের ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা কয়েকটি দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ।

প্রথমত, আমিরাতের বিরুদ্ধে ইয়েমেনিদের হুঁশিয়ারি বার্তা দেওয়ার পরই এই হামলার ঘটনা ঘটেছে। যদিও আমিরাত সরকার ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে দাবি করেছিল তারা ইয়েমেন থেকে তাদের সেনা প্রত্যাহার করে নিয়েছে কিন্তু ওই দেশটির অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ এবং ইয়েমেন বিরোধী ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে আমিরাত। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইয়েমেন বিরোধী তৎপরতা বহুগুণে বেড়েছে। এ কারণে ইয়েমেনের হুথি সমর্থিত ন্যাশনাল সালভেশন সরকার সবাইকে সতর্ক করে দিয়েছিল। ইয়েমেনের আনসারুল্লাহ আন্দোলনের রাজনৈতিক দফতরের কর্মকর্তা মোহাম্মদ আল বাখাইতি কিছুদিন আগে আমিরাতকে হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছেন, তারা যেন এমন কোনও কাজ না করে যাতে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। কারণ এ উত্তেজনা যদি অব্যাহত থাকে তাহলে ইয়েমেনি যোদ্ধারা আমিরাতের অভ্যন্তরে হামলা চালাবে।

ইয়েমেনিরা সোমবার আমিরাতে যে হামলা চালিয়েছে সে ব্যাপারে তারা আগেই আমিরাতকে সতর্ক করে দিয়েছিল। সানার প্রধান আলোচক এবং আনসারুল্লাহ মুখপাত্র মোহাম্মদ আব্দুস সালাম আমিরাতের বিরুদ্ধে তাদের অভিযানের প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, আমিরাতের মতো একটি ক্ষুদ্র দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরাইলের সেবাদাশে পরিণত হয়েছে এবং ইয়েমেনের মতো একটি মুসলিম দেশ থেকে দূরে সরে গেছে।

দ্বিতীয় বিষয়টি হচ্ছে, সম্প্রতি ইসরায়েলও দক্ষিণ ইয়েমেনে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করছে। ইসরায়েল দক্ষিণ ইয়েমেনে একটি সামরিক ঘাটি নির্মাণের কাজও শুরু করেছে। ইয়েমেনের সূত্রগুলো জানিয়েছে, ইসরায়েল সেখানকার একটি দ্বীপে সামরিক ঘাটি নির্মাণ করবে এবং আমিরাত এ ক্ষেত্রে সহযোগিতা করছে। প্রকৃতপক্ষে, আমিরাতের ধারণা ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার ফলে ইয়েমেনের ব্যাপারে তারা সহজে পার পেয়ে যাবে। সম্প্রতি ইয়েমেনের যোদ্ধারা তাদের পানি সীমায় আমিরাতের অস্ত্রবাহী একটি জাহাজ আটক করেছে। সোমবার আমিরাতে যে হামলা হয়েছে তা দক্ষিণ ইয়েমেনে ইসরায়েলের সঙ্গে আমিরাতের সহযোগিতার প্রতিক্রিয়া বলে ধারণা করা হচ্ছে। 

তৃতীয় বিষয়টি হচ্ছে, আমিরাতের শিল্প ও বাণিজ্যিক এলাকায় ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালিয়েছে ইয়েমেনের সেনাবাহিনী। ইয়েমেনিরা এটা বুঝতে পেরেছে যে আমিরাতের আগ্রাসন ও ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হলে তাদের অর্থনীতিকেই টার্গেট করতে হবে। এ কারণে তারা আমিরাতের শিল্প এলাকায় হামলা চালিয়েছে যেখানে প্রচুর বিদেশি বিনিয়োগ রয়েছে। এ অবস্থায় আমিরাত ইয়েমেনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র থামাবে কিনা সেটাই এখন দেখার বিষয়। সূত্র: পার্সটুডে

বিডি প্রতিদিন/কালাম

এই রকম আরও টপিক

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর