দক্ষিণ এশিয়ার দেশ শ্রীলঙ্কা গভীর এবং অভূতপূর্ব অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে রয়েছে। অর্থনৈতিক সঙ্কটের কারণে দেশটির জনগণের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। জনগণ রাস্তায় নেমে মাসের পর মাস বিক্ষোভ করেছেন এবং সেই বিক্ষোভের জেরে রাষ্ট্রপতি গোতাবায়া রাজাপক্ষেকে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার পর পদত্যাগও করতে হয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রধানের মতে, অন্যান্য দেশগুলিও একই ধরনের ঝুঁকিতে পড়তে পারে।
শনিবার আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভা বলেছেন, ‘উচ্চ হারে ঋণ গ্রহণকারী এবং সীমিত নীতি বাস্তবায়নের দেশগুলো বেশি সঙ্কটে পড়বে। এসব দেশের জন্য শ্রীলঙ্কা হলো সতর্ক সংকেত।’
তিনি আরও বলেন, ‘পরপর চার মাস ধরে উন্নয়নশীল দেশগুলো থেকে মূলধন বাইরে চলে যাচ্ছে। বিষয়টি এসব দেশের উন্নত অর্থনীতির সাথে যুক্ত হওয়ার স্বপ্নকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছে।’
বৈদেশিক মুদ্রা সঙ্কটের কারণে শ্রীলঙ্কা তার ২২ মিলিয়ন মানুষের জন্য খাদ্য, জ্বালানি এবং ওষুধের মতো গুরুত্বপূর্ণ দ্রব্য আমদানি করতে হিমশিম খাচ্ছে। দেশটির মূল্যস্ফীতি প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়েছে, খাদ্যের দাম এক বছর আগের তুলনায় ৮০ শতাংশ বেশি। এই বছর মার্কিন ডলার এবং অন্যান্য প্রধান বৈশ্বিক মুদ্রার বিপরীতে শ্রীলঙ্কার রুপির মূল্য উল্লেখযোগ্য হারে হ্রাস পেয়েছে।
অনেকে শ্রীলঙ্কার সঙ্কটের জন্য সদ্য সাবেক রাষ্ট্রপতি গোতাবায়াকে বিপর্যয়কর নীতি গ্রহণের মাধ্যমে অর্থনীতিকে ভুলভাবে পরিচালনা করার জন্য দায়ী করেন; মহামারী করোনাভাইরাসের কারণে অর্থনৈতিক সঙ্কট আরও তীব্র আকার ধারণ করেছে। ২০ বছরে এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের প্রথম দেশ হিসেবে বিদেশি ঋণ খেলাপি হয়েছে শ্রীলঙ্কা। আইএমএফের সাথে বেলআউটের আলোচনা শুরু হলেও রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার মধ্যে সে আলোচনা আপাতত থমকে আছে।
সূত্র : বিবিসি
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা