আরব আমিরাতের বিপক্ষে দুঃস্বপ্নের সিরিজ শেষ। এই প্রথম মরুরাজ্যের বিপক্ষে টি-২০ সিরিজ হারল বাংলাদেশ। দুঃসহ এমন সিরিজ হারের পর লিটন, নাজমুলদের পারফরম্যান্স ও সামর্থ্য নিয়ে কাটাছেঁড়া চলছে। সমালোচকরা সমালোচনার তরবারিতে এফোঁড়-ওফোঁড় করছেন। তখন হারকে জীবনেরই অংশ বলেছেন টাইগার অধিনায়ক লিটন, ‘যখন এখানে এসেছি, সব সময় ম্যাচ জেতার কথাই ভেবেছি। এটা (সিরিজ হেরে যাওয়া) জীবনেরই অংশ। যখন আপনি ক্রিকেট খেলবেন, প্রতিপক্ষ ভালো খেলবে, তাদের কৃতিত্ব দিতে হবে।’ জীবনের অংশ বললেও আইসিসি সহযোগী দেশের বিপক্ষে হার, নিঃসন্দেহে লিটনদের আত্মবিশ্বাসে চিড় ধরাবে। আত্মবিশ্বাসের দেয়ালে ফাটল নিয়ে লিটনরা নতুন মিশনে নামছেন। লিটনদের এবারের মিশন পাকিস্তান। শক্তিশালী পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩ ম্যাচের টি-২০ সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। যদিও আগের স্ক্যাজুয়ালে ৫ ম্যাচের সিরিজ ছিল। দুই প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তান যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে সিরিজের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছিল। যুদ্ধ থেমে গেলে বিসিবি ও পিসিবি বৈঠক করে ৩ ম্যাচের টি-২০ সিরিজ খেলতে সম্মত হয়। সিরিজের ম্যাচ তিনটির ভেন্যু লাহোর এবং তারিখ ২৮, ৩০ মে এবং ১ জুন। খেলা শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত ৯টায়।
সিরিজটিকে নিন্ডিদ্র নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে দেবে পাকিস্তান সরকার। সিরিজে পাকিস্তান সেনাবাহিনী মোতায়েনের অনুমোদন দিয়েছে দেশটির সরকার। সেনাবাহিনীর পাশাপাশি পুরো সিরিজজুড়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে বেসামরিক সশস্ত্র বাহিনীও মোতায়েন থাকবে। লিটনদের নিরাপত্তায় বাংলাদেশ থেকেও নিরাপত্তা সদস্য যাবেন পাকিস্তানে।
পাকিস্তান সিরিজ সামনে রেখে লিটন বাহিনী দুই দিন অনুশীলন করবে দুবাইয়ে। এরপর আগামীকাল লাহোরের উদ্দেশে দুবাই ছাড়বে। পাকিস্তানের মাটিতে টাইগাররা সর্বশেষ খেলেছে গত বছর আগস্টে। ২ টেস্ট ম্যাচ সিরিজ খেলেছিল রাওয়ালপিন্ডিতে। প্রথমবারের মতো পাকিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ জিতেছিল টাইগাররা। সেই আত্মবিশ্বাস অবশ্য সাহস জোগাবে ক্রিকেটারদের। টি-২০ সিরিজ খেলতে টাইগাররা সর্বশেষ পাকিস্তান গিয়েছিল ২০২০ সালের জানুয়ারিতে। সেবারও ৩ ম্যাচের সিরিজ খেলেছিল দুই দল। যদিও একটি ম্যাচ হতে পারেনি। কোনো বল হওয়ার আগেই ম্যাচ ভেসে গিয়েছিল বৃষ্টিতে। সিরিজ জিতেছিল পাকিস্তান ২-০ ব্যবধানে। দুই দল সর্বশেষ মুখোমুখি হয়েছিল ২০২৩ সাল গুয়াংজু এশিয়া গেমসে। ব্রোঞ্জ নির্ধারণী ম্যাচে বাংলাদেশ জিতেছিল ৬ উইকেটে। দুই দল এখন পর্যন্ত ১৯টি টি-২০ ম্যাচ খেলেছে পরস্পরের বিপক্ষে। পাকিস্তানের ১৬ জয়ের বিপরীতে বাংলাদেশের জয় ৩টি। একটি গুয়াংজুতে এবং বাকি দুই জয় মিরপুরে। টাইগাররা ২০১৬ সালে জিতেছিল ৫ উইকেটে এবং ২০১৫ সালে ৭ উইকেটে। পাকিস্তানের মাটিতে বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত পাঁচ বছর আগে একবারই টি-২০ সিরিজ খেলেছে। এবার দ্বিতীয়বারের মতো খেলবে।
আমিরাত ও পাকিস্তান সিরিজের জন্য ১৫ সদস্যের স্কোয়াড ঘোষণা করেছিল বিসিবি। শারজাতে আমিরাতের বিপক্ষে সিরিজে স্কোয়াডের সব ক্রিকেটার থাকলেও পাকিস্তান সফরে নেই। সিরিজ থেকে নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন ফাস্ট বোলার নাহিদ রানা। তার পরিবর্তে টিম ম্যানেজমেন্ট কাউকে নেয়নি। পিঠের ইনজুরির জন্য দেশে ফিরে এসেছেন বাঁ-হাতি ব্যাটার সৌম্য সরকার। তার পরিবর্তে নেওয়া হয়েছে স্পিন অলরাউন্ডার মেহেদি হাসান মিরাজকে। লাহোর কালান্দার্সের পক্ষে খেলতে মিরাজ এখন লাহোরেই অবস্থান করছেন।