বিশ্বের রাজনীতিক ও ব্যবসায়ীদের প্রতি রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান হামলার মোকাবেলায় ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা খাতে আরও বেশি বিনিয়োগ করার আহ্বান জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।
বৃহস্পতিবার রোমে শুরু হওয়া দু’দিনব্যাপী ‘ইউক্রেন পুনর্গঠন সম্মেলন’-এর উদ্বোধনী বক্তব্যে এ আহ্বান জানান ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।
সম্মেলনে ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘প্রথমেই আমাদের যা করতে হবে তা হলো, রাশিয়ান ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র থামানো। এর অর্থ হলো, বায়ু প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম, প্রতিরোধকারী ড্রোন, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ও ক্ষেপণাস্ত্রে বিনিয়োগ বাড়ানো।’
তিনি যোগ করেন, ‘আমি আমাদের সব অংশীদারদের অনুরোধ করছি আপনারা বিনিয়োগ বাড়ান। রাশিয়া যখন হামলা বাড়ায়, তখন আমাদের অর্থায়নে ঘাটতি থাকতে পারে না।’
ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি জানান, এ সম্মেলনে মোট প্রায় ১০ বিলিয়ন ইউরো (১২ বিলিয়ন ডলার) প্রতিশ্রুতির ঘোষণা আসবে। যদিও তিনি বিস্তারিত দেননি।
এটি রাশিয়ার ২০২২ সালের আক্রমণের পর চতুর্থ বার্ষিক সম্মেলন। এ সময়েই রাশিয়া টানা দ্বিতীয় রাত ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়, যাতে অন্তত দু’জন নিহত হয়।
জেলেনস্কি বলেন, ‘রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন চান আমাদের মানুষ কষ্ট পাক, ইউক্রেন ছাড়তে বাধ্য হোক, আমাদের ঘরবাড়ি, স্কুল-পুরো জীবন ধ্বংস হয়ে যাক।’
তিনি রোমে উপস্থিত প্রায় ২ হাজার কোম্পানি ও ৩০টি দেশের প্রতিনিধিদের আহ্বান জানান ইউক্রেন ও নিজেদের জন্য বিনিয়োগ বাড়াতে।
‘ড্রোন প্রযুক্তিতে ইউক্রেন বিশ্বের সবচেয়ে অগ্রসর দেশগুলোর একটি, আক্রমণ ও প্রতিরক্ষা, দু’ভাবেই আমরা আমাদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে প্রস্তুত।’
ইউরোপীয় ইউনিয়ন বৃহস্পতিবার জানায়, তারা ইউক্রেনের পুনর্গঠনে ২.৩ বিলিয়ন ইউরো (২.৭ বিলিয়ন ডলার) চিহ্নিত করেছে এবং বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে একটি নতুন ইকুইটি তহবিল গঠন করছে।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পুনরায় ক্ষমতায় ফেরার পর থেকে ওয়াশিংটনের সমর্থন নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ অবস্থায় ইউরোপ তাদের সহায়তা বাড়িয়েছে।
ইতালি, ফ্রান্স, জার্মানি ও পোল্যান্ড নতুন ইইউ তহবিলে অংশ নিচ্ছে। এটির প্রাথমিক মূলধন হবে ২২ কোটি ইউরো এবং ২০২৬ সালের মধ্যে ৫০ কোটি ইউরো সংগ্রহের লক্ষ্যে কাজ করবে।
মেলোনি বলেন, ‘আমরা উদ্যোক্তাদের যে বার্তা দিতে চাই তা খুব সহজ, ভয় পাবেন না, ইউক্রেন পুনর্গঠনে বিনিয়োগ করুন।’
তিনি আরও বলেন, ‘এটি কোনো জুয়া নয়, এটি অভাবনীয় ধৈর্য্য ও দৃঢ়তা দেখিয়েছে এমন একটি জাতির জন্য বিনিয়োগ। এটি ইউরোপের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, নাগরিকদের নিরাপত্তা এবং শান্তিতে বিনিয়োগ।’
সূত্র : এএফপি।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত