বাবার লাশ মর্গে রেখে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া রাকিয়া ওরফে আলফি (১৬) পাস করেছে। তিনি রাজশাহীর অগ্রণী বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয় থেকে পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-৪ পেয়েছেন। বৃহস্পতিবার প্রকাশ হয় এসএসসির ফলাফল।
জানা গেছে, চলতি বছরের ১০ এপ্রিল এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয়। আর ১৬ এপ্রিল রাতে মেয়েকে (আলফি) উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় খুন হন আকরাম আলী (৪৫)। নিহত বাবার লাশ মর্গে রেখে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) পরীক্ষায় বসেছিলেন আলফি (১৬)। সেদিন ১৭ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) আলফির ছিল ইংরেজি দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষা। তার পরীক্ষা কেন্দ্র ছিল রাজশাহী শিরোইল উচ্চ বিদ্যালয়।
জানা যায়, মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় ১৬ এপ্রিল রাত সাড়ে ১০টার দিকে রাজশাহী নগরীর তালাইমারি শহীদ মিনার এলাকায় বাবা আকরাম আলীকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এসময় আলফির বড় ভাই ইমাম হাসান অনন্তও আহত হন। নিহত আকরাম হোসেন পেশায় একজন বাসচালক। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে ইমাম হাসান অনন্ত বাদী হয়ে নগরীর বোয়ালিয়া থানায় সাতজনসহ অজ্ঞাত আরও চার থেকে পাঁচজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
আলফির চাচা আশরাফুজ্জামান সোহাগ বলেন, আমাদের প্রত্যাশা ছিল মেয়ে কমপক্ষে জিপিএ-৫ পাবে। কিন্তু যেদিন তার বাবা খুন হয়, তার পরের দিন তার ইংরেজি দ্বিতীয়পত্র বিষয়ের পরীক্ষা। একদিকে পরীক্ষা, অন্যদিকে বাবার লাশ মর্গে। সারারাত কান্নাকাটির পরে সকালে পরীক্ষা দিতে যাচ্ছিল না। অনেক বুঝিয়ে পরীক্ষা দিতে পাঠানো হয়। সব আল্লাহর ইচ্ছা।
ফল প্রকাশের পর বৃহস্পতিবার বিকালে আলফিদের বাড়িতে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি।
অগ্রণী বিদ্যালয় ও মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম বলেন, সে ক্লাসের ভালো ছাত্রী। তার বাবা মারা যাওয়ার ঘটনা খুবই দুঃখজনক। তারপরেও মেয়েটা পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল। পাস করেছে।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ