পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণের কারণে সিরাজগঞ্জ জেলায় যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি জেলার অভ্যন্তরীণ নদ-নদীগুলোর পানিও বাড়ছে। শুক্রবার সকাল ৬টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় যমুনা নদীর পানি সিরাজগঞ্জ শহররক্ষা বাঁধ হার্ডপয়েন্ট এলাকায় ৯ সেন্টিমিটার এবং কাজীপুর উপজেলার মেঘাই পয়েন্টে ১১ সেন্টিমিটার পানি বেড়েছে। তবে সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৮৪ ও কাজিপুর পয়েন্টে ২১১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
পানি বাড়ায় সিরাজগঞ্জ সদর, কাজীপুর চৌহালী, বেলকুচি ও শাহজাদপুর ৫টি উপজেলার নদী তীরে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে এসব এলাকার বেশ কিছু আবাদি জমি ও বসতবাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। এছাড়াও ভাঙ্গন ঝুঁকিতে রয়েছে নদী তীরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ফসলি জমি ও বসতবাড়ি। এদিকে, গত কয়েকদিনের বৃষ্টির কারণে জনজীবনে দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। কর্দমাক্ত হয়ে গেছে নিচু রাস্তাঘাটগুলো। এতে চলাফেরাতেও মানুষের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
জানা গেছে, সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার ভাটপিয়ারি ও বাহুকা, চরাঞ্চলের কাওয়াকোলা, কাজিপুর উপজেলার চরাঞ্চলের নিশ্চিন্তপুর, চরগিরিশ, খাসরাজবাড়ি, চৌহালী উপজেলার খাসবাজবাড়ি ইউনিয়নের জনতার স্কুল এলাকা ও স্থল ইউনিয়নের তেঘরি, শাহজাদপুর উপজেলার গালা, সোনাতনী ও কৈজুরী এবং বেলকুচি উপজেলা চরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে এসব অঞ্চলের আখ, পাট, বাদাম ও কাউনসহ বহু ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙ্গনের কবলে পড়ে কাজিপুরের চরাঞ্চলের চরগিরিশ ইউনিয়নের ভেটুয়া এলাকায় অন্তত শতাধিক বসতবাড়ি নদীতে বিলীন হয়েছে। এছাড়াও কাজিপুরের নাটুয়ারপাড়া ইউনিয়নের ফুলজোড় সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, চরগিরিশ নিম্ম মাধ্যমিক উচ্চ বিদ্যালয় ও ভেটুয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে। এদিকে, ভাঙ্গনবরোধে চৌহালী উপজেলার স্থল ইউনিয়নের তেঘরি এলাকা ও ভাটপিয়ারী এলাকায় ভাঙ্গনরোধে সম্প্রতি নদী তীরে মানববন্ধন করেছেন নদী তীরের বাসিন্দারা।
সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান জানান, নদীতে পানি বাড়ার কারনে প্রবল স্রোত নদী তীরে আঘাত হানছে। এ কারণে নদী তীরের কিছু কিছু স্থানে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সদর উপজেলার ভাটপিয়ারী ও বাহুকা এলাকায় জিওব্যাগ ও জিওটিউব ফেলে ভাঙ্গন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে। এছাড়া নদী তীরে সার্বক্ষণিক নজরধারি বাড়ানো হয়েছে। নদীতে পানি বাড়লেও বন্যার আশংকা নেই। তবে চরাঞ্চলের ভাঙনরোধে ব্যবস্থা গ্রহণে কোন প্রকল্প নেই।
বিডি প্রতিদিন/এএম