বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী ও বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান বার্কশায়ার হ্যাথওয়ের প্রধান নির্বাহী ওয়ারেন বাফেট তাঁর বিপুল সম্পদ দান করার বিষয়ে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার কথা জানিয়েছেন।
১৫ হাজার কোটি ডলারেরও বেশি সম্পত্তির মালিক বাফেট বলেছেন, জীবনের বাকি সময়েও তিনি দান অব্যাহত রাখবেন এবং মৃত্যুর পর তাঁর এই সম্পদ মানবহিতৈষী কাজে ব্যবহার করা হবে।
৯৪ বছর বয়সী বাফেট শেয়ারহোল্ডারদের উদ্দেশে এক চিঠিতে তাঁর মৃত্যুর পর সম্পদের ভাগ–বাঁটোয়ারা কীভাবে হবে তা বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেছেন। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘দিন শেষ সময় জয়ী হয়। কিন্তু সময় কখনো কখনো অন্যায্য ও নিষ্ঠুর। আজ পর্যন্ত আমি ভাগ্যবান। তবে বেশি দিন নেই, সে সময় চলে আসবে।’
ওয়ারেন বাফেট তাঁর তিন সন্তান- সুজি, হাওয়ার্ড ও পিটারের হাতে সম্পদের মানবহিতৈষী ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নেওয়ার দায়িত্ব দিয়েছেন। তবে সন্তানেরা যদি কোনো সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে ব্যর্থ হন, তাহলে সম্পদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের জন্য তিনটি ট্রাস্টি দায়িত্ব পালন করবে।
২০০৬ সালে বাফেট ঘোষণা করেছিলেন, তিনি ধীরে ধীরে তাঁর সম্পদ দান করবেন। চিঠিতে তিনি বলেন, ‘আমি কখনোই একটি বংশধারা তৈরি করতে চাইনি কিংবা এমন কোনো পরিকল্পনা করিনি, যা আমার সন্তানদের জীবনকালকে অতিক্রম করবে।’
বাফেট তাঁর কোম্পানির ১ হাজার ৬০০ ‘ক্লাস এ’ শেয়ার ২৪ লাখ ‘ক্লাস বি’ শেয়ারে রূপান্তর করছেন। এ রূপান্তরের ফলে ভোটাধিকার কিছুটা সীমিত হবে। রূপান্তরিত শেয়ারের মধ্যে ১৫ লাখ শেয়ার সুজান টমসন বাফেট ফাউন্ডেশনে দেওয়া হবে। এ ছাড়া তিনটি ফাউন্ডেশনে দেওয়া হবে আরও তিন লাখ শেয়ার।
বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনসহ চারটি পারিবারিক ফাউন্ডেশনে প্রতিবছর বাফেট দান করে থাকেন। সম্পদের বিপুল অংশ দানের জন্য তিনি বিশ্বজুড়ে পরিচিত।
যাঁদের বিপুল সম্পত্তি রয়েছে, তাঁদের জন্য পরামর্শ দিয়ে বাফেট বলেন, ‘আপনার সন্তানেরা যখন বড় হবে, তাঁদের আপনার উইল পড়তে দিন এবং নিশ্চিত করুন যে তাঁরা এর যুক্তি এবং মৃত্যুর পর তাঁদের দায়িত্ব বুঝতে পারে।’
বাফেটের এই উদ্যোগ কেবল তাঁর মানবহিতৈষী কাজেরই প্রতিফলন নয়, বরং একটি দৃষ্টান্তও স্থাপন করেছে, যা ভবিষ্যতের ধনীদের জন্য একটি শিক্ষণীয় দিক হতে পারে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ