জেন-জি আন্দোলনে পতন হয়েছে নেপাল সরকারের। এরই মধ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন দেশটির সুপ্রিম কোর্টের সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি। তার সুপারিশের ভিত্তিতে ইতোমধ্যেই সংসদ ভেঙে দিয়েছেন নেপালের প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পাউডেল। এছাড়া আগামী বছরের মার্চে নতুন নির্বাচনের তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।
নেপালের প্রেসিডেন্টের প্রেস উপদেষ্টা কিরণ পোখরেল সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, শুক্রবার রাতে প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশক্রমে সংসদ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। নতুন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে ২০২৬ সালের ৫ মার্চ।
জানা গেছে, শপথের মাধ্যমে শুক্রবার রাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন সুশীলা কার্কি। তার নেতৃত্বে ছোট মন্ত্রিসভার একটি সরকার গঠিত হয়েছে। এটির মেয়াদ থাকবে ছয় মাস। এই সময়ের মধ্যে অন্তর্বর্তী সরকারকে নতুন নির্বাচন আয়োজনের ম্যান্ডেট দেওয়া হয়।
এর আগে নেপালের জেন-জি বিক্ষোভকারীদের প্রতিনিধি, প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পাউডেল এবং সেনাবাহিনীর প্রধান অশোক রাজ সিগদেলের মধ্যে আলোচনা হয়। এরপর সুশীলাকে প্রধানমন্ত্রী বানানোর সিদ্ধান্তের ব্যাপারে সবাই একমত হন। এর মাধ্যমে তিনি দেশটির ইতিহাসে প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী হওয়ার রেকর্ড গড়লেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের প্রতিবাদে গত সপ্তাহে আন্দোলনে নামে নেপালের জেন-জিরা। এরমধ্যে গত ৮ সেপ্টেম্বর বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্টে ঢোকার চেষ্টা করলে তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। এতে অনেক শিক্ষার্থী নিহত হন। এরপর ক্ষোভে ফেনে পড়েন বিক্ষোভকারীরা।
পরদিন ৯ সেপ্টেম্বর তাদের আন্দোলনের তীব্রতা বাড়লে প্রধানমন্ত্রিত্ব ছাড়েন কে পি শর্মা অলি। এরপর তিনি গা ঢাকা দেন। ওইদিন বিক্ষোভকারীরা সাবেক দু’জন প্রধানমন্ত্রীসহ অনেক মন্ত্রীর বাড়িতে হামলা চালান। এরমধ্যে অর্থমন্ত্রীকে রাস্তায় পেটানোর ঘটনাও ঘটে।
সুশীলা কার্কি ২০১৬ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত নেপালের প্রধান বিচারপতি ছিলেন। তিনি দেশটির প্রথম নারী প্রধান বিচারপতি হন। বিচারক থাকাকালীন তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছিলেন এ কারণে জেন-জির কাছে তার জনপ্রিয়তা রয়েছে।
তিনি ভারতের বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। একবার ভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সুশীলা বলেছিলেন, ভারত নেপালকে অনেক সহায়তা করেছে। সূত্র: বিবিসি, সিএনএন, আল-জাজিরা, এএফপি
বিডি প্রতিদিন/একেএ