ঘরের বাইরে খেতে যাওয়া বর্তমানের মতো ৫ হাজার বছর আগেও ছিল জনপ্রিয়। এর প্রমাণ প্রত্নতত্ত্ববিদদের খুঁজে বের করা একটি প্রাচীন সরাইখানা (সরাইখানা হলো ব্যবসায়ের এমন একটি জায়গা যেখানে লোকরা মদ্যপ পানীয় পান করতে এবং খাবার সরবরাহ করতে জড়ো হয়)। ধারণা করা হচ্ছে, এ সরাইখানাটি খ্রিস্ট্রপূর্ব ২ হাজার ৭০০ বছর আগের। পেনসিলভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইউনিভার্সিটি অব পিসার গবেষকরা এ পানশালা খুঁজে বের করেছেন। এটি পাওয়া গেছে ইরাকের প্রাচীন শহর লাগাশে। এ লাগাশ প্রাচীন মেসোপটেমিয়া সভ্যতায় গুরুত্বপূর্ণ শহর ছিল। আর নতুন আবিষ্কারের পরই পিছিয়ে যাচ্ছে ফ্রিজ বা রেফ্রিজারেটরের ইতিহাস। প্রাথমিক অনুমানে সরাইখানাটিতেই ছিল একটি মাটির ফ্রিজার বা রেফ্রিজারেটর। একই সঙ্গে উদ্ধার হয়েছে প্রচুর বাটি, থালা। আর পাত্রের অংশ। একই সঙ্গে অবশিষ্ট খাবারের অংশও উদ্ধার করেছেন প্রত্নতত্ত্ববিদরা।
সংবাদ সংস্থা এপির একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৫ হাজার বছর আগেও সরাইখানাটিকে বসে বসে বিয়ার পানের ব্যবস্থা ছিল। শুধু বিয়ার নয়, সঙ্গে পরিবেষণ করা হতো খাবারও কারণ কিছু পাত্রে পশুর হাড় আর মাছের কাঁটা উদ্ধার করা গেছে। এ জাতীয় খাবার সুমেরীয় সভ্যতার বাসিন্দাদের কাছে খুব জনপ্রিয় ছিল। গবেষকরা ড্রোন ফটোগ্রাফি, থার্মাল ইমেজিং, গ্যামনেটোমেট্রি ও মাইক্রেস্ট্র্যাটিগ্রাফিক স্যাম্পলিং এর মতো উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করেছে। যেসব ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার হয়েছে সেগুলো প্রায় ৪ হাজার ৭০০ বছর পুরনো। প্রত্নতাত্ত্বিকদের দাবি যেগুলো আবিষ্কার হয়েছে সেগুলো থেকে তৎকালীন সুমেরীয়বাসীদের জীবনধারা সম্পর্কে অনেক তথ্য পাওয়া যাবে। প্রত্নতাত্ত্বিক দলের প্রধান হলি পিটম্যান বলেছেন, ‘আমরা যেটি আবিষ্কার করেছি তাতে স্পষ্ট এটি কোনো একজন নির্দিষ্ট ব্যক্তির বাড়ি নয়। কিন্তু এ স্থানে অনেকের একসঙ্গে খাবার ব্যবস্থা করা হতো। তাই এটিকে সরাইখানা বলাই শ্রেয়। এখানে প্রচুর মানুষ একসঙ্গে আসত আর মেলামেশা করত, আর একসঙ্গে বসে খাবার খেত।’ হলি পিটম্যান আরও বলেন সুমেরীয়বাসীদের কাছে সুরা হিসেবে বিয়ার খুবই জনপ্রিয় ছিল। পানির থেকেও এ এলাকার মানুষ বেশি বিয়ার পানে অভ্যস্ত ছিল। তিনি আরও বলেছেন প্রাচীন যুগে বিয়ার তৈরির রেসিপিও তাদের হাতে এসেছে। কারণ তারা উদ্ধার করেছেন একটি কিউনিফর্ম ট্যাবলেট।