ভারতের দিল্লিতে ৯ ও ১০ সেপ্টেম্বর বসছে বিশ্বের বড় অর্থনীতির দেশগুলোর সংগঠন জি২০ সম্মেলন। এ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার আশা করা হচ্ছিল বিশ্বের তিন প্রভাবশালী নেতা অর্থাৎ মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের। কিন্তু রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিন পিং এই সম্মেলনে যোগ দিচ্ছেন না তা সম্প্রতি ঘোষণা দিয়েছেন। আর তা নিয়ে রীতিমতো অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। রবিবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমি খুবই অসন্তুষ্ট, তবে শিগগিরই আমাদের অর্থাৎ চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা হবে।’
গত বছর ইন্দোনেশিয়ার বালিতে জি২০ শীর্ষ সম্মেলনে এই দুই নেতার দেখা হয়েছিল। চীনা প্রেসিডেন্ট কেন বিশ্বনেতাদের এই গুরুত্বপূর্ণ সম্মেলনে যাচ্ছেন না তা পরিষ্কার নয়। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, সম্মেলনে তার এই অনুপস্থিতির বেশ গুরুত্ব আছে। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্র এবং জি২০ শীর্ষ সম্মেলনের স্বাগতিক দেশ ভারতের সঙ্গে চীনের সম্পর্কে কিছু টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনের সম্পর্কে উত্তেজনা কমাতে এ বছর ওয়াশিংটনের দিক থেকে কিছু কূটনৈতিক দৌড়ঝাঁপ সত্ত্বেও খুব একটা ফল হয়নি।
আর চীন এবং ভারতের সম্পর্কেও তিক্ততা তৈরি হয়েছে সীমানা বিরোধকে ঘিরে। হিমালয় অঞ্চলে সীমানা বিরোধ নিয়ে এই দুই দেশ সেখানে মুখোমুখি অবস্থানে আছে। গত সপ্তাহে বেইজিং একটি মানচিত্র প্রকাশ করে যেখানে ভারতের অরুণাচল প্রদেশ এবং আকসাই-চিন মালভূমি চীনের অংশ বলে দেখানো হয়েছে। এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিল ভারত। বাইডেন রবিবার সাংবাদিকদের আরও বলেন, আমি আশাবাদী শিগগিরই চীনা প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা হবে। কারণ আগামী নভেম্বরে আমেরিকার সান ফ্রান্সিসকোতে বসছে এপেক শীর্ষ সম্মেলন। সেখানেই জিন পিংকে আমন্ত্রণ জানানো হতে পারে। আর তিনি ওই বৈঠক এড়াতে পারবেন না বলেই মনে করছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। দিল্লিতে জি২০ সম্মেলনে জিন পিংয়ের পরিবর্তে প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং সম্মেলনে চীনের প্রতিনিধিত্ব করবেন। সম্পর্কোন্নয়নের চেষ্টায় সাম্প্রতিক মাসগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা দফায় দফায় বেইজিং সফর করেছেন। এদের মধ্যে আছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন, অর্থমন্ত্রী জানেট ইয়েলেন এবং যুক্তরাষ্ট্রের জলবায়ুবিষয়ক বিশেষ দূত জন কেরি। এদিকে জিন পিং তার দেশকে উন্নয়নশীল দেশগুলোর নেতা হিসেবে তুলে ধরছেন এবং মার্কিন নেতৃত্বাধীন বিশ্ব ব্যবস্থার বিপরীতে একটি বিকল্প ব্যবস্থা গড়ে তোলার পক্ষে সমর্থন বাড়ানোর চেষ্টা করছেন। গত মাসে তিনি যখন ব্রিকস সম্মেলনে যোগ দিতে দক্ষিণ আফ্রিকায় যান, তখন সেখানে ‘পশ্চিমা আধিপত্যের’ সমালোচনা করেন। তিনি উন্নয়নশীল দেশগুলোকে ‘ঔপনিবেশিক জোয়াল’ থেকে মুক্ত হওয়ার আহ্বান জানান।
যুবরাজ সালমানও আসবেন না : পাকিস্তানের খবরের কাগজ দ্য নেশন গতকাল সূত্র উদ্ধৃত করে লিখেছে, জি২০ বৈঠকে নাও আসতে পারেন সৌদি আরবের যুবরাজ মুহাম্মদ বিন সালমান। তবে এ বিষয়ে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এখনো পর্যন্ত কোনো তথ্য দেয়নি।
