তীব্র দাবদাহে বিপর্যস্ত ইউরোপ। ইতালি, স্পেন, পর্তুগাল, ফ্রান্স, জার্মানিসহ একাধিক দেশে রেকর্ড গরমে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সরকারিভাবে জারি করা হয়েছে সতর্কতা। এদিকে গতকাল ফ্রান্সে তাপ-সম্পর্কিত অসুস্থতায় দুজনের মৃত্যু হয়েছে। ইতালিতে প্রচণ্ড গরমে বাইরে বের হওয়ায় নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে সরকার। কিছু অঞ্চলে দুপুরে খোলা আকাশের নিচে কাজ করাও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পালেরমো শহরে রাস্তায় হাঁটার সময় অজ্ঞান হয়ে এক নারী মারা যান। হাসপাতালগুলোর জরুরি বিভাগে রোগীর সংখ্যা ১৫-২০ শতাংশ বেড়েছে, বেশির ভাগই বয়স্ক ও ডিহাইড্রেশনে আক্রান্ত। স্পেনে কাতালোনিয়ার তারাগোনায় গাড়িতে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। আন্দালুসিয়ার হুয়েলভা প্রদেশে ৪৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে, যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ। জুন মাসে গড় তাপমাত্রা ছিল ২৩.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস- যা ২০১৭ সালের আগের রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে। পর্তুগালের মোরা শহরে তাপমাত্রা ৪৬.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়েছে, যা জুন মাসে দেশের সর্বোচ্চ বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। ফ্রান্সে অতিরিক্ত গরমে অনেক স্কুল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। -দ্য গার্ডিয়ান
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, শ্রেণিকক্ষে শিশু ও শিক্ষকদের জন্য ঝুঁকি তৈরি হয়েছে। ভয়াবহ ঝড়ের কারণে ইতালি ও ফ্রান্সের মধ্যে ট্রেন চলাচলও সাময়িকভাবে বন্ধ। অন্যদিকে জার্মানিতে, ‘বেটিনা’ নামে একটি তাপপ্রবাহ প্রায় পুরো দেশকে গ্রাস করেছে। তাপমাত্রা পৌঁছেছে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, শুধু উপকূল ও পার্বত্যাঞ্চল কিছুটা স্বস্তিতে আছে। তুরস্কে দাবানলে জ্বলছে বনাঞ্চল। বনমন্ত্রী জানিয়েছেন, গত কয়েক দিনে ২৬৩টি দাবানল হয়েছে। হাজার হাজার মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
পর্যটনেও প্রভাব : প্যারিসে ৩৮ ডিগ্রি তাপমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ায় সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে আইফেল টাওয়ারের চূড়া। ব্রাসেলসে বন্ধ করা হয়েছে জনপ্রিয় অ্যাটোমিয়াম স্মৃতিস্তম্ভ। শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সংস্থা এবং শিল্প গোষ্ঠীগুলো বলছে, ইউরোপের বহু প্রতিষ্ঠান এ ধরনের চরম আবহাওয়ার জন্য প্রস্তুত নয়। তারা দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এমন চরম তাপপ্রবাহ আরও ঘন ঘন ও ভয়াবহ হয়ে উঠবে এবং এখনই ব্যবস্থা না নিলে বিপর্যয় আরও বাড়বে।