বৈধ মার্কিন ভিসাধারী চীনা নাগরিকদের তাদের স্থাপনাগুলোতে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা। অর্থাৎ বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানিত মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্রগুলোর একটিতে কাজ করার সুযোগ থেকে চীনারা কার্যত বঞ্চিত হলেন।
সূত্রের বরাত দিয়ে ব্লুমবার্গ নিউজ জানিয়েছে, চীনা নাগরিকরা কেবল ঠিকাদার বা গবেষণায় অবদান রাখা শিক্ষার্থী হিসেবে নাসায় কাজ করতেন। তারা ৫ সেপ্টেম্বর জানতে পারেন যে, নাসার সিস্টেম ও স্থাপনাগুলোতে তাদের সব ধরনের প্রবেশাধিকার বাতিল করা হয়েছে।
পরে নাসা বিষয়টি নিশ্চিত করে জানায়, আমাদের কাজের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে চীনা নাগরিকদের সংস্থার স্থাপনা, উপকরণ ও নেটওয়ার্ক ব্যবহারে সীমাবদ্ধতা আরোপ করা হবে। -বিবিসি
চীনের দ্রুত অগ্রসরমাণ মহাকাশ কর্মসূচি যুক্তরাষ্ট্রকে আতঙ্কিত করেছে এবং দুই বৃহত্তম অর্থনীতির মধ্যে মহাকাশ প্রতিযোগিতা আরও বাড়িয়ে তুলেছে। চীনা নভোচারীদের আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন (আইএসএস) থেকেও ইতোমধ্যে বাদ দেওয়া হয়েছে। কারণ, ওয়াশিংটন নাসাকে চীনের সঙ্গে তথ্য ভাগাভাগি করতে নিষেধ করেছে। জাতীয় নিরাপত্তা উদ্বেগের কারণে নাসার সর্বশেষ এই বিধিনিষেধ দুই দেশের মধ্যে বৈজ্ঞানিক সহযোগিতার অবনমন আরও বাড়িয়ে দিল। ফলে প্রযুক্তিগত আধিপত্য অর্জনের প্রতিযোগিতায় বেইজিং ও ওয়াশিংটন এখন একে অপরের প্রতি আরও সতর্ক হয়ে উঠেছে। এই সন্দেহের কারণে অনেক চীনা শিক্ষার্থীর জন্য, বিশেষ করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি পড়াশোনা করা শিক্ষার্থীদের জন্য ভিসা পাওয়া কঠিন হয়ে উঠেছে। এমনকি ভিসা পাওয়ার পরও তাদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে বাধা দেওয়া হয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যুক্তরাষ্ট্রে চীনা নাগরিকদের বিরুদ্ধে একাধিক গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ আনা হয়েছে এবং বিশেষভাবে বিজ্ঞানীরা নজরদারির আওতায় এসেছেন। নাসা কত আগে চীনা নাগরিকদের সতর্ক করেছিল তা স্পষ্ট নয়। ব্লুমবার্গ জানিয়েছে, তারা হঠাৎ করে আবিষ্কার করেন যে, নাসার তথ্য সিস্টেমে তাদের প্রবেশ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে এবং তাদের কাজ-সংক্রান্ত সভায় অংশগ্রহণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে-সেটি সরাসরি হোক বা অনলাইনে। নাসার প্রেস সেক্রেটারি বেথানি স্টিভেন্স সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, নাসা আসলেই চীনা নাগরিকদের বিষয়ে অভ্যন্তরীণ পদক্ষেপ নিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে আমাদের স্থাপনাগুলোতে শারীরিক ও সাইবার নিরাপত্তা প্রবেশাধিকার সীমিত করা। চীন তার মহাকাশ আকাঙ্ক্ষা গোপন করেনি। বেইজিং ও ওয়াশিংটন উভয়ই নিজ নিজ মহাকাশযাত্রীদের চাঁদে পাঠাতে প্রতিযোগিতা করছে।