১৬ অক্টোবর, ২০২১ ০৮:১৯

সুন্দর চরিত্র জান্নাতের সোপান

মুহাম্মাদ হেদায়াতুল্লাহ

সুন্দর চরিত্র জান্নাতের সোপান

প্রতীকী ছবি

নৈতিকতা মানুষের অভ্যন্তরীণ গুণ। মানুষের বাহ্যিক কথাবার্তা, আচার-ব্যবহার, আলাপচারিতা, লেনদেন সর্বোপরি পুরো দৈনন্দিন জীবনযাপনে নৈতিকতার প্রভাব ফুটে ওঠে। আখলাক এর আরবি প্রতিশব্দ। বিখ্যাত আরবি ভাষাবিদ আল্লামা আবদুল কাহির আল জুরজানি এর পরিচিতিতে বলেন, ‘অন্তরের প্রতিক্রিয়া যা বাহ্যিক আচার-ব্যবহারের মাধ্যমে কোনো ধরনের চিন্তা-ভাবনা ছাড়াই স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রকাশ পায়।  তার কর্ম ভালো হলে তা উত্তম চরিত্র বলে গণ্য হবে। আর কর্ম মন্দ হলে তা মন্দ চরিত্র হিসেবে গণ্য হবে। (আত তারিফাত, পৃষ্ঠা : ১০১)

নৈতিকতার মাপকাঠি : পবিত্র কোরআনের অসংখ্য আয়াতে নৈতিকতার মূল কথা বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ ন্যায়বিচার, সদাচরণ ও আত্মীয়দের দানের নির্দেশ দেন এবং অশ্লীলতা, অসৎ কাজ ও অবাধ্যতা থেকে নিষেধ করেছেন, তিনি তোমাদের উপদেশ দেন যাতে তোমরা শিক্ষা গ্রহণ করো।’ (সুরা : নাহাল, আয়াত : ৯০)

মহানবী (সা.)-এর চরিত্রের নমুনা : মহানবী (সা.) ছিলেন উত্তম চরিত্রের সব গুণাবলির আধার। তাঁর সব গুণে মুগ্ধ ছিলেন পরিচিতজনরা। সাআদ বিন হিশাম (রা.) থেকে একটি দীর্ঘ হাদিসে বর্ণিত আছে, তিনি উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রা.)-কে জিজ্ঞেস করেন, হে উম্মুল মুমিনিন, আমাকে মহানবী (সা.)-এর চরিত্র সম্পর্কে কিছু বলুন। আয়েশা (রা.) বলেন, ‘আপনি কি পবিত্র কোরআন পাঠ করেননি? তিনি বলেন, হ্যাঁ, করেছি। আয়েশা (রা.) বলেন, রাসুল্লাহ (সা.)-এর চরিত্র ছিল কোরআনসদৃশ।’ (মুসলিম, হাদিস : ৭৪৬)

সুন্দর চরিত্র জান্নাতের সোপান : আবু হুরাইরা (রা.) বর্ণনা করেন, মানুষকে সবচেয়ে জান্নাতে নেবে এমন কিছু সম্পর্কে রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করা হয়। তিনি বলেন, ‘আল্লাহর ভয় ও সুন্দর চরিত্র।’ অতঃপর মানুষকে যা জাহান্নামে নেবে এমন বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়। তিনি বলেন, মুখ ও লজ্জাস্থান।’ (তিরমিজি, হাদিস : ২০০৪)

অজ্ঞদের এড়িয়ে চলার নির্দেশ : মহান আল্লাহ প্রিয়নবী (সা.)-কে সমাজের অজ্ঞদের অবান্তর প্রশ্ন এড়িয়ে চলতে বলেছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আপনি ক্ষমা অবলম্বন করুন। সৎকাজের নির্দেশ দিন এবং অজ্ঞদের এড়িয়ে চলুন।’ (সুরা : আরাফ, আয়াত : ১৯৯)

অনৈতিকতা ও পাপাচার পরিহার : মহানবী (সা.) সব ধরনে অনৈতিকতা ও পাপাচার পরিহারের নির্দেশ দিয়েছেন। আবু জর (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সা.) আমাকে বলেন, ‘তুমি যেখানেই থাক আল্লাহকে ভয় করো। মন্দ কাজ করে ফেললে এরপর ভালো কাজ করো। তাহলে মন্দের কাজের গুনাহ মুছে দেবে। মানুষের সঙ্গে সুন্দর আচরণ করো।’ (তিরমিজি, হাদিস : ১৯৮৭)

আল্লাহ মানুষের কাজ দেখেন : আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ তাআলা তোমাদের অবয়ব দেখেন না। তোমাদের আকার-আকৃতিও দেখেন না। তবে তিনি তোমাদের অন্তর ও কর্মগুলো দেখেন।’ (মুসলিম, হাদিস : ২৫৬৪)

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন

সর্বশেষ খবর