৩ মে, ২০২২ ১১:৪১

ভারত জুড়ে পালিত হচ্ছে খুশির ঈদ

দীপক দেবনাথ, কলকাতা

ভারত জুড়ে পালিত হচ্ছে খুশির ঈদ

মঙ্গলবার সারা ভারতের সাথে পশ্চিমবঙ্গেও পালিত হচ্ছ ঈদুল ফিতর। এ উপলক্ষ্যে এদিন সকালে রাজ্যটির বিভিন্ন মসজিদ ও ঈদগাহে ঈদের নামাজে সামিল হন মুসলিমরা। সকাল সাড়ে ৮ টা নাগাদ ঈদের সবচেয়ে বড় নামাজটি হয় কলকাতার রেড রোডে। নামাজ পড়ান ইমাম কোয়ারি ফজলুর রহমান। প্রায় লাখো মুসল্লি এই নামাজে অংশ নিয়েছিলেন। 

এছাড়াও নাখোদা মসজিদ, টিপু সুলতান মসজিদ, পার্ক সার্কাস, ময়দান, খিদিরপুর সহ রাজ্যের অসংখ্য মসজিদে নামাজ আদায় করা হয়। নামাজ শেষেই একে অপরকে আলিঙ্গন করেন, কুশল বিনিময় করেন মুসলিম ধর্মপ্রাণ মানুষেরা। সকাল থেকেই নতুন জামা-কাপড় পরে রাস্তায় নামেন হাজারও মানুষ।

এদিন সকালে রেড রোডে ঈদের নামাজে অংশ নেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি। সাথে ছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী জাভেদ খান, তৃণমূল সাংসদ অভিষেক ব্যানার্জি, তৃণমূল বিধায়ক ইদ্রিস আলি, রাজ্য পুলিশের ডিজি মনোজ মালব্য, কলকাতা পুলিশ কমিশনার বিনীত কুমার গোয়েল প্রমুখ। 

ঈদের নামাজে উপস্থিত হয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি শুভেচ্ছা জানিয়েছেন রাজ্যবাসীকে। তিনি বলেন, সময় এসেছে এবার মুসলমান সম্প্রদায়ের মানুষকেও এগিয়ে যেতে হবে। এবার এই সম্প্রদায়ের মানুষও যাতে দেশের শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তা হতে পারে তার চেষ্টা করতে হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। এদিন সকালেও সোশ্যাল মিডিয়ায় বার্তা দিয়ে মমতা ব্যানার্জি শুভেচ্ছা জানান। পাশাপাশি তিনি ঐক্য ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার কথা বলেন। 

মমতা আরো বলেন, "আমি কাফনের জন্য অপেক্ষা করি না, কাফন আমার জন্য অপেক্ষা করে। তাই গোটা দেশে যে ডিভাইড এন্ড রুল নীতি চলছে তা ঠিক নয়, বিচ্ছিন্ন করে রাখার যে নীতি সেটাও ঠিক নয়। আমরা একতা চাই। সবাইকে একসাথে থাকতে হবে। একসাথে কাজ করতে হবে কিন্তু কেউ কেউ সাম্প্রদায়িক বিভেদ তৈরীর চেষ্টা করছে, হিন্দু মুসলমানকে বিভক্ত করার চেষ্টা করছে। কিন্তু আপনারা তাদের কথা শুনবেন না।"

কেন্দ্রীয় সরকারকে নিশানা করে মমতা ফের বলেন, "বর্তমানে দেশের অবস্থা ও পরিস্থিতি ভালো নয়। ধর্মের নামে হিংসার রাজনীতি করা হচ্ছে। এভাবে বেশি দিন চলবে না। ধর্মের নামে দেশকে টুকরো টুকরো করতে দেওয়া যাবে না বলেও তিনি জানিয়েছেন। মমতা বলেন, ধর্মের নামে যারা হিংসার রাজনীতি করে তাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছে তৃণমূল সরকার। সেই লড়াইতে সাফল্যের জন্য সকলে যেন তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে প্রার্থনা করে - সেই আবেদনও জানিয়েছেন তিনি।' 

দেশজুড়ে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার কারণে গত দুই বছর রেড রোডে ঈদের কোন জমায়েত হয়নি। ফলে রমজানের রোজা শেষে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই এই সময় ধর্মপ্রাণ মুসলিমরা নিজের বাড়িতেই ঈদের নামাজ আদায় করেন। 
অনেকে আবার মোবাইলে ডিডিও কলের মাধ্যমেও একে অপরকে ঈদ মোবারক জানান। সেক্ষেত্রে দীর্ঘদিন পর এই রেড রোডসহ বিভিন্ন মসজিদ ও ঈদগাহে ঈদের নামাজে অংশ নিতে পেরে নিজেদের খুশি ব্যক্ত করেছেন মুসলিমরা। 

পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি খুশির ঈদ পালিত হচ্ছে দিল্লিসহ জম্মু-কাশ্মীর, ভোপাল, মুম্বাই, পাটনাসহ দেশটির প্রতিটি শহরে। দিল্লির জামা মসজিদ, ফতেপুরি মসজিদে এদিন হাজার হাজার মানুষ নামাজে অংশ নেয়। ঈদ উপলক্ষে কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল রাজধানী দিল্লিকে। নাশকতা এড়াতে দিল্লিসহ প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ শহরেই ছিল পুলিশের কড়া নজরদারি।

ঈদ উপলক্ষে ভারতবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন দেশটির রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃত্ব।

বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর