শুক্রবার, ৪ এপ্রিল, ২০১৪ ০০:০০ টা

ত্রিপক্ষীয় সমঝোতায় জিন্দা পার্ক এখন রাজউকের দখলে

ত্রিপক্ষীয় সমঝোতায় জিন্দা পার্ক এখন রাজউকের দখলে

ত্রিপক্ষীয় সমঝোতায় রূপগঞ্জের বহুল আলোচিত জিন্দা পার্ক দখলে নিল রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। এতদিন অগ্রপথিক পল্লী সমিতি নামে একটি সমাজসেবী সংগঠন পার্কটি পরিচালনা করত। পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর দীর্ঘ আন্দোলন ও গতকাল দিনব্যাপী উত্তেজনা শেষে বিকালে পার্কটি দখলে নেয় রাজউক। রাজউকের সঙ্গে পার্ক কর্তৃপক্ষ ও পরিবেশ আন্দোলনের নেতাদের ত্রিপক্ষীয় সমঝোতার ভিত্তিতে এ সমস্যা সমাধান হয়। সমঝোতার শর্তে বলা হয়, যারা তিলে তিলে পার্কটি গড়ে তুলেছেন তারাই এর ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনায় থাকবেন। সমাঝোতায় পার্কের পক্ষে ছিলেন, পরিবেশ আন্দোলন (পবা) চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, যুগ্ম সম্পাদক পঙ্কজ ভট্টাচার্য, পরিবেশ আন্দোলন নেতা এম এইচ পল্টন, লাকি মোরল, অধ্যাপক নূর মোহাম্মদ, মিহির বিশ্বাস, পার্কের প্রতিষ্ঠাতা তোবারক হোসেন কুসুম ও রাজউকের পক্ষে ছিলেন সদস্য (প্রশাসন) ভবেশ চন্দ্র পোদ্দার, সদস্য (এস্টেট) শামিম ইকবাল, সদস্য (উন্নয়ন) এম এ নাঈম, প্রধান প্রকৌশলী এমদাদুল ইসলাম, ম্যাজিস্ট্রেট রোকন উদ-দৌলা, জেলা পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে প্রায় ৬০০ পুলিশ জিন্দা পার্ক উচ্ছেদের জন্য পার্কের সামনে অবস্থান নেয়। অন্যদিকে পার্ক রক্ষায় অগ্রপথিক পল্লী সমিতির কয়েক হাজার সদস্যসহ এলাকাবাসীও অবস্থান নেয়। চৈত্রের রোদে দিনভর চলে পার্ক রক্ষার আন্দোলন। পরে বিকাল সাড়ে ৩টায় প্রায় পার্ক কর্তৃপক্ষ ও পরিবেশ আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে রাজউক কর্মকর্তাদের সমঝোতার ভিত্তিতে 'রাজউক জিন্দা পার্ক' নামের একটি সাইনবোর্ড স্থাপন করে পার্কটি দখলে নেয় রাজউক। তবে সমঝোতায় রাজউক সম্মত হয় যে, তিলে তিলে যারা পার্কটি গড়ে তুলেছেন তারাই এর ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনায় থাকবেন। এ ছাড়া সব কিছু রাজউকের আওতায় থাকবে। এ জন্য রাজউকের নিয়মানুযায়ী সব কিছু করা হবে। পুলিশ সুপার সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেন, সুষ্ঠু সমাধানের ফলে এখানে কোনো সংঘাত হয়নি। সবার অধিকার রক্ষা হয়েছে। অগ্রপথিক পল্লী সমিতির পর্যটন ম্যানেজার মনসুরুর রহমান কাজল বলেন, পার্কটি রক্ষার জন্য আমরা জীবন দিতেও প্রস্তুত ছিলাম। পরে সমঝোতা হয়েছে। ১৯৮১ সালে প্রায় ১০০ বিঘা জমির ওপর অগ্রপথিক পল্লী সমিতির নামে জিন্দা পার্ক গড়ে তুলেন পার্কের স্বপ্নদ্রষ্টা তোবারক হোসেন কুসুমসহ পাঁচ যুবক। বর্তমানে এ সমিতির সদস্য প্রায় ৫ হাজার। বহু লোকের কর্মসংস্থান হয় এ পার্ক থেকে। পূর্বাচল উপশহর গড়তে ১৯৯৩ সালে রাজউক ৩০ নম্বর সেক্টরে অবস্থিত পার্কের জমিটি অধিগ্রহণ করে। তখন থেকে পার্কটি দখলের চেষ্টা চালায় রাজউক। কিন্তু এলাকাবাসীসহ পরিবেশ আন্দোলনের বাধার মুখে রাজউক উচ্ছেদ করতে পারেনি।

 

সর্বশেষ খবর