কর্তৃপক্ষের অযত্ন আর অবহেলায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে নাটোরের সিংড়া উপজেলার ৩০০ বছরের পুরনো স্থাপত্যকলার অন্যতম নিদর্শন চৌগ্রাম জমিদার বাড়ি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহণ না করায় চলনবিলের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত একমাত্র জমিদার বাড়িটি আগাছাবেষ্টিত আছে। ২০০৮ সালে সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হামিদুর রহমান জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে পর্যটন মন্ত্রণালয়ে চৌগ্রাম জমিদার বাড়ি সংরক্ষণের জন্য একটি চিঠি পাঠান। কিন্তু পাঁচ বছরেও সে চিঠির কোনো উত্তর আসেনি। ইতিহাসবিদ ও প্রবীণদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ১৭২০ সালে জেলা শহর থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে চলনবিলের উত্তর-পূর্ব কোণে প্রায় ৪৮ একর জমির ওপর ৯টি পুকুরসহ রাজা রামজীবনের দান করা জমিতে এই জমিদার বাড়ি নির্মাণ করেন জমিদার রসিক রায়। নাটোর রাজার অধীনে চৌগ্রাম জমিদার বাড়ি ছিল একটি মাত্র পরগনা। এর একটি ইতিহাস রয়েছে। নাটোর রাজস্টেটের প্রতিষ্ঠাতা রাজা রামজীবনের একমাত্র পুত্র রাজ কুমার কালিকা প্রসাদ অকালে মারা যান। তার কোনো সন্তান না থাকায় রামজীবন একটি পুত্র সন্তান দত্তক নেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। কিন্তু চৌগ্রামের রসিক রায়ের ছিল দুই পুত্র কৃষ্ণকান্ত ও রামকান্ত। রাজা রামজীবন এদের মধ্যে রামকান্তকে দত্তক নেন। পরে রামজীবন কৃতজ্ঞতা স্বরূপ নাটোরের সিংড়া উপজেলার চৌগ্রাম এবং রংপুরের ইসলামাবাদ পরগনা রসিক রায়কে দান করেন। জমিদার রসিক রায় মারা যাওয়ার পর জমিদার কৃষ্ণকান্ত ১৭২০ সালে চৌগ্রাম ও ইসলামাবাদে দুটি জমিদার বাড়ি নির্মাণ করেন। এই জমিদারির আয়তন ছিল ২৯ হাজার ৪৮৭ একর। জমিদার বাড়ির প্রবেশ পথেই রয়েছে মূল ফটক। উত্তর কোণে জমিদার ভবনের পাশেই বৈঠকখানা ও তহশিল ভবন। দক্ষিণে জোড়ামঠ, পূর্ব উত্তর কোণে হজরত শাহ ইয়ামেনি (রহ.)-এর মাজার। সবাই তাকে বুড়াপীর বলে ডাকতেন। জমিদার কৃষ্ণকান্তর শাসনামলে অষ্টাদশ শতকে হজরত বুড়াপীর চৌগ্রামে আসেন। অসুস্থ জমিদার কৃষ্ণকান্ত অনেক চিকিৎসার পরও সুস্থ না হলে হজরত বুড়াপীর অসুস্থ জমিদারকে সুস্থ করে তোলেন। অসুস্থ হয়ে মারা গেলে বুড়াপীরকে জমিদার বাড়ির পশ্চিম পাশে কবর দেওয়া হয়। কৃষ্ণকান্তের মৃত্যুর পর তার পুত্র রুদ্রকান্ত জমিদারি গ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন একজন খ্যাতনামা কবি। উর্দুভাষায় লেখা তার ‘চণ্ডির কবিতা’ ভারতবর্ষে ব্যাপক সাড়া পেয়েছিল। জমিদারি প্রথার পরে জমিদার রাজেশকান্তসহ সপরিবারে দেশ ত্যাগ করেন। এরপর জমিদার বাড়িটি অরক্ষিত হয়ে পড়ে। আজও সেই ইতিহাস জড়ানো চৌগ্রাম জমিদার বাড়িটি সংরক্ষনের কেউ উদ্যোগ গ্রহণ করেননি। বর্তমানে জমিদার বাড়ির প্রসাদে চৌগ্রাম তহশিল অফিস করা হয়েছে। সেখানেও রাজপ্রাসাদের ছাদের পলেস্তরা ধসে পড়ছে। ফলে তহশিল অফিসের কর্মকর্তা ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। এছাড়া স্থানীয়রা প্রাসাদের ইট খুলে নিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু দেখার কেউ নেই।
শিরোনাম
- নির্বাচনের প্রস্তুতির ধীর গতির প্রশ্নে সরব জিল্লুর রহমান
- রাজধানীতে গুলিবিদ্ধ সেই হাসপাতাল কর্মচারীর মৃত্যু
- গতানুগতিক নয়, পিআর পদ্ধতিতেই নির্বাচন দিতে হবে : নায়েবে আমির
- চাঁদপুরে অসুস্থ লঞ্চ যাত্রীকে চিকিৎসা সহায়তা কোস্ট গার্ডের
- মোহনগঞ্জে বালুবাহী নৌকা ডুবে দুই শ্রমিক নিখোঁজ
- রাস্তায় নেমে এসেছিলেন বাবা-মাও
- আইজিপির ছবি ব্যবহার করে ভুয়া ভিডিও, সতর্ক করল পুলিশ সদর দপ্তর
- পাঁচ দিনে গোপন করা হয় ৩২২ মৃত্যুর তথ্য
- চব্বিশের অভ্যুত্থানে প্রাপ্তিটা কী
- ইনজুরিতে মেসি, মাঠে ফিরতে পারবেন কবে?
- ঢাকার বাতাসে আজ কতটা দূষণ?
- সাতসকালে ইসরায়েলে হামলা, বেজে উঠল সাইরেন
- একনজরে আজকের বাংলাদেশ প্রতিদিন (৫ আগস্ট)
- আজ রাজধানীর যেসব সড়ক এড়িয়ে চলার নির্দেশনা দিয়েছে ডিএমপি
- জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবস ঘিরে চট্টগ্রামে নানা আয়োজন
- ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আরও দুইজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৩৯৫
- গোপন করার কিছু নেই, এনসিপি কিংস পার্টি : ইফতেখারুজ্জামান
- যৌন হয়রানির অভিযোগে বেরোবির অধ্যাপক বরখাস্ত
- স্বৈরতান্ত্রিক বন্দোবস্তের স্থায়ী বিলোপে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে : চরমোনাই পীর
- বগুড়ায় পাঁচ শতাধিক কৃতি শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা
চৌগ্রাম জমিদার বাড়ি এখন ধ্বংসস্তূপ
নাসিম উদ্দীন নাসিম, নাটোর
প্রিন্ট ভার্সন

এই বিভাগের আরও খবর