রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০১৯ ০০:০০ টা
প্রকৃতি

ভগতপাড়ায় লাখো বাদুড়ের আবাস

নীলফামারী প্রতিনিধি

ভগতপাড়ায় লাখো বাদুড়ের আবাস

শত প্রতিকূলতার মাঝেও লাখো বাদুড়ের আবাস গড়ে উঠেছে সৈয়দপুর উপজেলার বাঙ্গালীপুর ইউনিয়নের ভগতপাড়া গ্রামে। এলাকার বট-পাখৈর গাছের শাখায় শাখায় এরা পা আটকিয়ে ঝুন্ডেল দিন কাটায়। একএকটির ওজন প্রায় ২ থেকে ৩ কেজি। জানা গেছে, প্রায় দেড়শ বছর আগে তিন একরের বাঁশঝাড় ও দুটি প্রাচীন বটগাছে বাদুড়ের বসবাস শুরু হয়। এরপর এলাকার মানুষ এদের সৌভাগ্যের প্রতীক বলে মেনে নেওয়ায় বাদুড়দের বংশবৃদ্ধি ঘটেছে। শীত আসার আগেই এখানে লাখ লাখ বাদুর এসে অবস্থান নেয়। ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য অজিত চন্দ্র রায় বলেন, বাদুড় নিরীহ প্রাণী। এরা মাটিতে পড়ে গেলে আর উঠতে পারে না। মাটিতেই মারা যায়। এদের পা নেই। তবে পেটের নিচে দুটো হুক আছে। এই দিয়েই তারা ঝুলে থাকে। খাদ্যের অভাব মেটানো ছাড়া এরা কোনো ক্ষতি করে না। সারাদিন ঘুমায় এরা। সন্ধ্যায় বেরিয়ে যায় আহারের সন্ধানে। আবার ফিরে আসে ভোরে। পাখি ও পরিবেশ সুরক্ষা নিয়ে কাজ করা স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘সেতুবন্ধনের’ প্রতিষ্ঠাতা আলমগীর হোসেন বলেন, বাদুড় নিয়ে কুসংস্কারের যুগ কেটে গেছে। এরা মানুষের উপকার করে। বিশেষ করে কলা আর অ্যাভোকাডোসহ প্রায় ৩০০ রকমের গাছের বীজ ছড়াতে সাহায্য করে। আবার কীটপতঙ্গ খেয়ে ফসলকে রক্ষা করে। তাই মানব কল্যাণকারী ও পরিবেশ বান্ধব এ স্তন্যপায়ী প্রাণীটি রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব। শিক্ষক আমিনুর রহমান বলেন, দেড়শ বছর পুরনো প্রায় ৩ একরের বাঁশঝাড় ও দুটি বটগাছের মধ্যে প্রাকৃতিকভাবে এখানে বাদুড়েরা নির্ভয়ে বসতি গড়ে তোলে। এটি রক্ষায় পরিবেশবাদী সংগঠন সেতুবন্ধন ও এলাকাবাসী আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। যার কারণে স্তন্যপায়ী এ প্রাণীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েছে। নীলফামারী জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, বাদুড়ের অভয়াশ্রম এখানকার পরিবেশ ও প্রকৃতি সুরক্ষায় কাজ করছে। এই অভয়াশ্রম রক্ষায় প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করবে জেলা প্রশাসন। এটি দেখভাল করার জন্য উপজেলা প্রশাসন এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোকেও বলা হয়েছে।

সর্বশেষ খবর