বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২০ ০০:০০ টা
জেলার রাজনীতি ফেনী

বিএনপির দুর্গ আওয়ামী লীগের দখলে

জমির বেগ, ফেনী

ফেনী জেলার ৩টি সংসদীয় আসনের মধ্যে একটি আওয়ামী লীগ একটি জাতীয় পার্টি ও একটি জাসদের (ইনু)। এদিকে জেলার উপজেলা (৬টি), পৌরসভা (৫টি) ও ৪৩টি ইউনিয়নের মধ্যে ৪২টি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দখলে। জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন হয়েছে ২০১৯ সালের ২৬ অক্টোবর। তবে কেন্দ্রীয় কমিটি এখনো পূর্ণাঙ্গ কমিটির অনুমোদন দেয়নি। জেলা কমিটির আগেই জেলার প্রতিটি সাংগঠনিক ইউনিটের সম্মেলন শেষ হয়েছে। জেলা কমিটির সম্মেলনে সাবেক সভাপতিকে কাউন্সিলরদের ভোটের মাধ্যমে পরাজিত করে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আক্রামুজ্জামান সভাপতি নির্বাচিত হন। সাধারণ সম্পাদক পদে অন্য কোনো প্রার্থী না থাকায় সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও ফেনী সদর আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী একক প্রার্থী  হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন। ফেনী জেলা আওয়ামী লীগ ও সব সহযোগী সংগঠন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সদর আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারীর নির্দেশনা মতো এক মঞ্চে থেকে রাজনীতি করছে। বাস্তবতা হলো ফেনীতে নিজাম হাজারীকে উপেক্ষা করে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের  কারও কিছু করার ক্ষমতা নেই। তার কথাই এখানে শেষ কথা। ফেনীর আলোচিত ও সমালোচিত নেতা জয়নাল হাজারীর রাজনৈতিক পরাজয়ের পর অনেকটা ভেঙে পড়া জেলা আওয়ামী লীগকে প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী প্রকাশ্যে ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক প্রটোকল অফিসার আলাউদ্দিন আহম্মেদ চৌধুরী নাসিম নেপথ্যে থেকে নিজাম হাজারীকে দিয়ে শক্ত হাতে গড়ে তোলেন। যার ফলে বেগম খালেদা জিয়ার নিজ জেলা বিএনপি অধ্যুষিত এই অঞ্চলটি যেন এখন আওয়ামী লীগের একটি দুর্গ।

বিএনপি : একসময় বেগম খালেদা জিয়ার নিজ জেলা ফেনীর বিএনপি কোন্দলে জর্জরিত ছিল। দীর্ঘ ১০ বছর জেলা বিএনপির কাউন্সিল না হওয়ায় ঝিমিয়ে পড়েছিল পুরো দল। ২০১৯ সালে ২ অক্টোবর সাবেক ছাত্র ও যুবনেতাদের নিয়ে গঠন করা হয় জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি। এই কমিটি হওয়ার পর তাদের অন্তঃকোন্দল অনেকটা নিরসনের দিকে রয়েছে। এখন প্রকাশ্যে তাদের কোনো গ্রুপিং দেখা যায় না। বিএনপির নেতারা জানান, আদালতে হাজিরা দিতে দিতেই তারা শ্রান্ত-ক্লান্ত এখন গ্রুপিং করার সময় কই। তারা এখন খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছেন। কেন্দ্রীয় কর্মসূচিসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করার জন্য তাদের পুলিশের অনুমতির অপেক্ষা করতে হচ্ছে। তবে মাঝে-মধ্যে তারা অনুমতি ছাড়াও ঝটিকা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে। তাদের সব কর্মসূচি শহরের একটি সড়কে সীমাবদ্ধ।  জামায়াতে ইসলামী : যুদ্ধাপরাধে জড়িত নেতাদের বিচারের প্রতিবাদে ফেনীতে জামায়াত হিংস্রতা দেখালেও ২০১৫ সালে সরকারবিরোধী আন্দোলন থেকে এখন পর্যন্ত মাঠে তাদের কোনো ভূমিকা নেই। জামায়াত ফেনীতে বর্তমানে চলে গেছে অনেকটা আন্ডার গ্রাউন্ডে।

জাতীয় পার্টি : সাবেক মন্ত্রী লে. কর্নেল জাফর ইমাম (অব.) বীরবিক্রম মন্ত্রী থাকাকালে ফেনীতে খুবই প্রতাপশালী ছিল জাতীয় পার্টি। বর্তমানে এখানে তাদের অবস্থান খুবই নাজুক। জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব হাজী আলাউদ্দিনসহ জেলার শীর্ষ নেতারা আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়ার পর এখানে জাতীয় পার্টির অবস্থা হয়ে পড়েছে আরও নাজুক। তবে ফেনী ৩ আসনে জাতীয় পার্টির পক্ষে নির্বাচন করে জয়ী হয়েছেন সাবেক সেনা কর্মকর্তা লে. জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী। এখানে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টির জেলা সভাপতি নাজমা আক্তার। দুজন এমপি থাকায় এখনো মাঠে তাদের নামটি রয়েছে।

জাসদ : ফেনী ১ আসনের সংসদ সদস্য জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য শিরীন আক্তার। ফেনীতে জাসদের কোনো শক্ত অবস্থান না থাকায় শিরীন আক্তারকেও বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করতে হয় আওয়ামী লীগের সহযোগিতায়।

সর্বশেষ খবর