বিশ্ববাজারে বাংলাদেশি বাগদা চিংড়ির চাহিদা বাড়ছে। জানা গেছে, বিশ্বের মোট চিংড়ি রপ্তানিতে বাগদা চিংড়ির দখল ১১ শতাংশ। ফলে আগামী পাঁচ বছর বাগদা চিংড়ি রপ্তানিতে ১০ হাজার কোটি টাকার সম্ভাবনা দেখছেন ব্যবসায়ীরা। তারা ক্রেতাদের কাছে বাংলাদেশি চিংড়ি জনপ্রিয় করতে ব্র্যান্ড নাম দিয়েছেন ‘আমিয়ান শ্রিম্প’। আমিয়ান হলো সাতক্ষীরার একটি গ্রাম।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যমতে, সর্বশেষ ২০১৮-১৯ অর্থবছরে চিংড়ি রপ্তানি হয়েছে ৩৬১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। চলতি ২০১৯-২০ অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বর পর্যন্ত পাঁচ মাসে ১৭৭ মিলিয়ন ডলারের চিংড়ি রপ্তানি হয়েছে। বাংলাদেশ থেকে ইউরোপে সবচেয়ে বেশি চিংড়ি রপ্তানি হচ্ছে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, জাপানেও চিংড়ি রপ্তানি করছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার দেওয়া তথ্যমতে, বিশ্ববাজারে চিংড়ির চাহিদা বাড়ছে। ২০১৪ সালে যেখানে ৪৩ লাখ টন চিংড়ির চাহিদা ছিল, তা পাঁচ বছরের ব্যবধানে বেড়ে ২০১৯ সালের নভেম্বর পর্যন্ত হয়েছে ৪৮ লাখ টন। বাংলাদেশ ফ্রোজেন ফুড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএফএফইএ) তথ্যমতে, বাংলাদেশে প্রতি হেক্টর জমিতে ৩০০ থেকে ৪০০ কেজি গলদা ও বাগদা চিংড়ি চাষ হয়। বর্তমানে দেশে ২ লাখ ৭৫ হাজার ৫০৯ হেক্টর জমিতে চিংড়ি চাষ হচ্ছে। বিশ্বের মোট চিংড়ি রপ্তানিতে বাগদা চিংড়ির দখল ১১ শতাংশ। এ প্রসঙ্গে বিএফএফইএ সভাপতি কাজী বেলায়েত হোসেন বলেন, ‘বাগদা ভালো চিংড়ি। তবে দাম বেশি। বিশ্ববাজারে এই চিংড়ির চাহিদা আছে। কিন্তু উৎপাদন কম। উৎপাদন বাড়ানোই এখন আমাদের বড় চ্যালেঞ্জ। এ ছাড়া নতুন প্রজাতির ভেনামি চিংড়ি পরীক্ষামূলক উৎপাদন চলছে। এখানে সফলতা পেলে রপ্তানিতে ব্যাপক সম্ভাবনা তৈরি হবে।’ এ খাতে দেশের শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান এসিআই অ্যাগ্রিবিজনেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ড. এফ এইচ আনসারী বলেন, ‘‘আমরা চিংড়ি মাছের ব্র্যান্ড নাম দিয়েছি ‘আমিয়ান শ্রিম্প’। আমিয়ান হচ্ছে সাতক্ষীরার প্রত্যন্ত অঞ্চলের একটা গ্রাম। এ গ্রামের মানুষ যাতে মনে করে, এই চিংড়ি আমেরিকায় যাবে এবং আমাদের গ্রামের নামে বিক্রি হবে।’’ তিনি রপ্তানি সম্ভাবনা তুলে ধরে বলেন, ‘আগামী পাঁচ বছরে চিংড়ি খাত থেকে ১০ হাজার কোটি রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে বাংলাদেশকে এগোতে হবে। প্রথম বছর ভর্তুকি ২০ শতাংশ দেওয়া উচিত।
পরের বছর ১৮ শতাংশ, এর পরের বছর ১৬ শতাংশ, এর পরের বছর ১৪ শতাংশ এবং এর পরের বছরে ১২ শতাংশে এনে ধাপে ধাপে শেষ করা উচিত। চিংড়ি মাছের ওপর ভর্তুকি দেওয়া হয় ৮ শতাংশ। ফলে বাংলাদেশের বাগদা চিংড়ি সারা বিশ্বে প্রভাব বিস্তার করবে।