শনিবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২২ ০০:০০ টা
এলাকাবাসীর উচ্ছ্বাস

তেঁতুলতলা মাঠে মেতেছে শিশু-কিশোররা

নিজস্ব প্রতিবেদক

তেঁতুলতলা মাঠে মেতেছে শিশু-কিশোররা

রাজধানীর কলাবাগান তেঁতুলতলা মাঠে থানা ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্তে সৃষ্ট বিতর্কের অবসান হয়েছে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে। কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ না করে এটি উন্মুক্ত মাঠ হিসেবে রাখার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এর ফলে দীর্ঘদিন ধরে মাঠ রক্ষার আন্দোলনে জড়িত মানবাধিকার কর্মী, পরিবেশ কর্মী, সংস্কৃতি কর্মীদের পাশাপাশি উচ্ছ্বসিত এলাকাবাসীও। স্থানীয় শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে বয়োবৃদ্ধরা ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীকে। গতকাল তেঁতুলতলা মাঠে দেখা যায় স্থনীয় শিশু-কিশোররা ফুটবল খেলায় মেতেছে। দীর্ঘ দুই মাস পর মাঠে খেলতে নেমে যেন তাদের আনন্দের শেষ নেই। এ সময় মাঠের পাশে স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই দাঁড়িয়ে ছিলেন। নিজেদের মধ্যে নানা আলোচনা করছিলেন। তেঁতুলতলা মাঠে দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করা পুলিশ সদস্যদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। স্থনীয়দের মতে মাঠটি যেন আগের রূপ ফিরে পেয়েছে। খেলার ফাঁকে স্কুল পড়ুয়া কিশোর সাফাত জানায়, প্রায় দুই মাস তারা এ মাঠে খেলতে পারেনি। মাঠে এলেই পুলিশ তাদের ফিরিয়ে দিয়েছে। গতকাল মাঠে খেলতে নেমে ভালো লাগার কথা জানায় এই কিশোর। আরেক শিশু বিপ্লব বলে, ‘প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ, আমাদের মাঠ তিনি আমাদের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন।’

স্থানীয় বাসিন্দা রাতুল বলেন, ‘অবসর সময়ে আমরা মাঠে বসে আড্ডা দিই, সময় কাটাই। বাচ্চারা সময় পেলে খেলাধুলা করে। এ জায়গাটুকু চলে যাওয়ায় আমাদের সবারই খারাপ লাগছিল। এখন এটি আবার এলাকাবাসীর কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এটা আমাদের কাছে এবারের সেরা ঈদ উপহার।’ ষাটোর্ধ্ব শাহ আলম বলেন, ‘আমি যখন থেকে এ এলাকায় বসবাস করছি তখন থেকেই এটি খালি জায়গা হিসেবে দেখছি। চারদিকে সুউচ্চ ভবনের মাঝখানে এক টুকরো খালি এ জায়গাটি এখানকার সবার, বিশেষ করে শিশুদের কাছে অনেক স্পেশাল। এ জায়গাটি মাঠ হিসেবেই থাকছে, এর চেয়ে খুশির খবর আর হতে পারে না।’ তেঁতুলতলা মাঠ রক্ষা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক সৈয়দা রত্না বলেন, ‘আমার বিশ্বাস ছিল আমাদের দাবির কথা প্রধানমন্ত্রীর কান পর্যন্ত পৌঁছালে তিনি মাঠের পক্ষে থাকবেন। আমি অনেক চেষ্টা করেছি আমাদের কথাগুলো পৌঁছে দেওয়ার। অবশেষে তাঁর কাছে আমাদের কথাগুলো পৌঁছেছে। আমার বিশ্বাস সঠিক ছিল। লাভ ইউ বুবু, আপনাকে ধন্যবাদ।’ মাঠে স্থাপনা না হওয়ার ঘোষণাকে এলাকার শিশু-কিশোরদের জন্য ঈদ উপহার উল্লেখ করে বাংলাদেশ স্থপতি ইনস্টিটিউটের সভাপতি মোবাশ্বের হোসেন বলেন, ‘শিশু-কিশোরদের পক্ষে থেকে প্রধানমন্ত্রী আবারও প্রমাণ করলেন তিনি বঙ্গবন্ধুকন্যা।’ বৃহস্পতিবার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে জানান, মাঠটিতে আর কোনো নির্মাণকাজ হবে না। জায়গাটি যেভাবে ছিল সেভাবেই থাকবে। এটি আগের মতো এলাকাবাসী ব্যবহার করবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরামর্শে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সর্বশেষ খবর