মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক আবদুর রহমানের ছেলে তাওসিফ রহমান সুমন (১৭) হত্যাকাণ্ডে গ্রেপ্তার লিমন মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল রাজশাহী মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আমলি আদালতে (রাজপাড়া) হাজির করে পুলিশ সাত দিনের রিমান্ড চায়। আদালতের বিচারক মামুনুর রশিদ পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এদিকে, আসামির বক্তব্য গণমাধ্যমে প্রচার হওয়ায় রাজশাহী মহানগর পুলিশ কমিশনার আবু সুফিয়ানকে ব্যাখ্যা দিতে তলব করেছেন সিএমএম আদালতের বিচারক মামুনুর রশিদ। মহানগর দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর আলী আশরাফ মাসুম জানান, শোকজ নোটিশে পুলিশ কমিশনারকে ১৯ নভেম্বরের মধ্যে আদালতে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে জবাব দিতে বলা হয়েছে। নোটিশে বলা হয়, গত ১৩ নভেম্বর রাজশাহী মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আবদুর রহমানের ভাড়া বাসায় ঢুকে তার ছেলে তাওসিফ রহমানকে (সুমন) ছুরিকাঘাতে হত্যা এবং তার স্ত্রী তাসমিন নাহার লুসিকে ছুরিকাঘাতে গুরুতর জখম করে। এরপর অভিযুক্ত লিমন মিয়াকে পুলিশ গ্রেপ্তার শেষে রাজশাহী মেডিকেলে ভর্তি করেছে। পরবর্তীতে অভিযুক্ত লিমন মিয়া পুলিশি হেফাজতে থাকাবস্থায় বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ভিকটিমকে দোষারোপ করে বক্তব্য দেন। যা বিভিন্ন মামলায় প্রদত্ত সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
পুলিশ হেফাজতে থাকাবস্থায় ভিকটিমকে দোষারোপ করে মিডিয়ায় বক্তব্য প্রদানের সুযোগ দেওয়ায় কেন আরএমপি কমিশনার মো. আবু সুফিয়ানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে না তা আগামী ১৯ নভেম্বরের মধ্যে স্বশরীরে আদালতে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার বিকালে রাজশাহী নগরীর ডাবতলা এলাকায় ভাড়া বাসায় খুন হয় মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ আবদুর রহমানের ছেলে তাওসিফ। এ সময় হামলায় জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি তাওসিফের মা তাসমিন নাহার লুসি (৪৪)।
ভবনটির দারোয়ান মেসের আলী বলেন, অভিযুক্ত লিমনকে তিনি আগে কখনো দেখেননি। বিচারকের ভাই পরিচয় দেওয়ায় তিনি ঢুকতে দেন। তার আগে নাম ও মোবাইল নম্বর লিখিয়ে নেন। বেলা আড়াইটার দিকে ওই যুবক ফ্ল্যাটে যান। এর প্রায় ৩০ মিনিট পর ফ্ল্যাটের গৃহকর্মী তাকে এসে জানান, বিচারকের ছেলে ও স্ত্রীকে কুপিয়ে আহত করা হয়েছে। এরই মধ্যে ভবনের অন্য ফ্ল্যাটের বাসিন্দারাও চলে আসেন। তারা সবাই ফ্ল্যাটে ঢুকে তিনজনকেই আহত পান। এরপর তিনজনকেই হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।