বাঘের হুংকারে তটস্থ থাকে বনের সব প্রাণী। সেই বাঘও এখন গ্রীষ্মের তীব্র দাবদাহের কাছে পরাজিত। নেই তার চিরাচরিত হুংকার। গরমে কাহিল হয়ে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার বাঘ এখন চৌবাচ্চায় খুনসুটিতে ব্যস্ত। পক্ষান্তরে, কখনো ছায়ায় ঘুমিয়ে, কখনো পানিতে নেমে সময় কাটাচ্ছে সিংহ। অস্বস্তির এই গরমে ভালো নেই চিড়িয়াখানার খাঁচাবন্দি অন্য প্রাণীগুলোও। গরম থেকে বাঁচতে অধিকাংশ সময়ই পানিতে সময় কাটাচ্ছে বাঘ, সিংহ, ভালুকসহ সব প্রাণী।
চলছে গ্রীষ্মের চরম দাবদাহ। বৈশাখের খরতাপে মানুষের জীবন ওষ্ঠাগত। তীব্র গরমে উৎকণ্ঠিত মানুষ নানাভাবে ঘোরাঘুরি করতে পারলেও নির্দিষ্ট গণ্ডিবদ্ধ চিড়িয়াখানার প্রাণীগুলো সীমানাও পার হতে পারছে না। ফলে চিড়িয়াখানার সাড়ে ৬ শতাধিক প্রাণী গরমে কষ্টের সময় পার করছে। তীব্র গরমে খাবার গ্রহণেও অনীহা প্রাণীগুলোর। পরিবর্তন এসেছে আচরণে। খাঁচার পশুপাখিগুলোর স্বস্তি দিতে প্রতিদিন সরবরাহ করা হচ্ছে বাড়তি পানি। প্রাণীগুলোকে পানিশূন্যতা থেকে বাঁচাতে দেওয়া হচ্ছে ওরস্যালাইন ও ভিটামিন সিযুক্ত খাবার। শারীরিকভাবে দুর্বল প্রাণীগুলোর দিকে দেওয়া হচ্ছে বিশেষ নজর। জানা যায়, গত এক সপ্তাহ ধরে চট্টগ্রামসহ সারা দেশে তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে থাকছে। গতকাল চট্টগ্রামে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৫.৭ ডিগ্রি সেলিসিয়াস। তাছাড়া, চলতি মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কাও আছে। এর প্রভাবে বেড়েছে তাপমাত্রা।
চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর ডা. শাহাদাত হোসেন শুভ বলেন, গরমে চিড়িয়াখানার প্রাণীগুলোর অবস্থা কাহিল। খাঁচাবন্দি প্রাণীগুলোকে গরম থেকে স্বস্তি দিতে নানা উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে বেশি পানি সরবরাহ করা হচ্ছে। বাড়ানো হয়েছে সার্বক্ষণিক নজরদারি। চিড়িয়াখানা সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি নগরের ফয়েস লেক পাহাড়ের পাদদেশে ৬ একর জায়গায় নির্মিত হয় চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা। এখানে ৭০ প্রজাতির ৬২০টি পশুপাখি আছে। এর মধ্যে বাঘ, সিংহ, কুমির, জেব্রা, ময়ূর, ভালুক, উটপাখি, ইমু, হরিণ, বানর, গয়াল, অজগর, শিয়াল, সজারু, বিভিন্ন জাতের পাখি ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। আছে পাঁচটি বিরল সাদাসহ ১৬টি বাঘ ও ছয়টি জেব্রা।