খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে ভোট গ্রহণ ১২ জুন। ভোটের দিন যত এগিয়ে আসছে প্রার্থীদের ব্যস্ততা ততই বাড়ছে। প্রচারণাকালে প্রার্থীরা খুলনার উন্নয়নসহ নাগরিক সেবা বৃদ্ধির আশ্বাস দিচ্ছেন। খুলনায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী তালুকদার আবদুল খালেক গতকাল সকালে বাংলাদেশ ব্যাংক ও আশপাশের এলাকায় গণসংযোগ করেন। এ ছাড়া তিনি খুলনা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়, নিউমার্কেট এলাকায় গণসংযোগ, ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে পূজা পরিষদ নেতাদের সঙ্গে বৈঠক ও মহিলা সমাবেশে যোগ দেন।
তালুকদার আবদুল খালেক খুলনার উন্নয়নের স্বার্থে আবারও নৌকায় ভোট দিয়ে তাকে বিজয়ী করার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, উন্নয়নের জন্য আমরা সর্বোচ্চ টাকা পেয়েছিলাম কিন্তু করোনার জন্য সময়মতো তার সবটা খরচ করতে পারিনি। বর্তমানে আড়াই শ সড়ক ও ড্রেনেজ উন্নয়ন কাজ চলছে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে এগুলো সম্পন্ন হলে খুলনার চেহারাই বদলে যাবে। স্বাধীনতা সাংবাদিক নির্বাচন প্রচারণা কমিটির আয়োজনে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি বলেন, বিগত দিনে খুলনার স্বার্থে আমি বিভিন্ন অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করেছি। নিজের স্বার্থে কিছুই করিনি। পুনরায় মেয়র নির্বাচিত হলে খুলনার সব অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করা হবে। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন স্বাধীনতা সাংবাদিক নির্বাচন প্রচারণা কমিটির আহ্বায়ক এস এম নজরুল ইসলাম। অন্যদিকে ২৮ দফা নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনোনীত প্রার্র্থী মাওলানা আবদুল আউয়াল। গতকাল খুলনা প্রেস ক্লাবে ইশতেহার ঘোষণাকালে তিনি মেয়র নির্বাচিত হলে নগরবাসীর পৌরকর ৩০ শতাংশ মওকুফ ও ট্রেড লাইসেন্স ফি অর্ধেক করার ঘোষণা দেন। এ ছাড়া ইশতেহারে পায়ে চালিত রিকশা, ভ্যান ও ঠেলাগাড়ির লাইসেন্স ফি মওকুফ করা, ব্যাটারিচালিত রিকশা, ইজিবাইকের লাইসেন্স ফি অর্ধেক করার ঘোষণা দেন তিনি। তিনি বলেন, প্রাকৃতিক পরিবেশ সুন্দর থাকা সত্ত্বেও আজ খুলনা আবর্জনাভরা, যানজট ও মশার শহরে পরিণত হয়েছে।
সুষ্ঠু শিক্ষা ও বিনোদনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই। রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রচ্ছায়ায় অলিগলিতে মাদকের ছড়াছড়ি। নির্বাচিত হলে তিনি দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন, জবাদিহি নিশ্চিতকরণ, নগর বিশেষজ্ঞ কমিটি, যানজট নিরসন, ওয়ার্ডভিত্তিক পরিকল্পনা প্রণয়ন, মশক নিধনে কার্যকর ব্যবস্থা, মাদকনিয়ন্ত্রণে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের আশ্বাস দেন। জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম মধু সকাল থেকেই রূপসা বাজার, রূপসা ট্রাফিক মোড়, ৩০ ও ৩১ নম্বর ওয়ার্ডে গণসংযোগ ও পথসভা করেছেন। এ সময় তিনি জলাবদ্ধতা, মশকনিধন, দূষণমুক্ত পরিকল্পিত নগরী গড়তে তাকে লাঙ্গল প্রতীকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানান।
২০১৩ সালে শফিকুল ইসলাম মধু সিটি মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। ওই সময় তার নির্বাচনী প্রতীক ছিল দোয়াত-কলম। ওই নির্বাচনে মধু পরাজিত হন। কিন্তু এবার দলীয় প্রতীক লাঙ্গল পাওয়ায় নেতা-কর্মীদের মধ্যে বাড়তি উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। শফিকুল ইসলাম মধু বলছেন, বিএনপি-জামায়াত এ নির্বাচনে না থাকায় ভোটপ্রাপ্তিতে নতুন সমীকরণ তৈরি হতে পারে। তিনি পরিকল্পিত উন্নয়নের স্বার্থে লাঙ্গল প্রতীকে ভোট দিয়ে তাকে নির্বাচিত করার আহ্বান জানান।