সোমবার, ৫ জুন, ২০২৩ ০০:০০ টা

খুলনায় ৯ নেতা বহিষ্কারে আরও দ্বিধাদ্বন্দ্বে বিএনপি

নিজস্ব প্রতিবেদক, খুলনা

দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় ৯ নেতাকে আজীবন বহিষ্কার করেছে বিএনপি। দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত চিঠিতে তাদের বহিষ্কার করা হয়।

তবে কাউন্সিলর প্রার্থী দলের ৯ নেতাকে বহিষ্কারের ঘটনায় খুলনার তৃণমূলে বিএনপি আরও কোণঠাসা হয়েছে বলে মনে করছেন নেতা-কর্মীদের একাংশ। বহিষ্কৃতদের অনেকে বলছেন, নির্বাচনে স্থানীয় মানুষের চাহিদা মেটানো ও দাবির পরিপ্রেক্ষিতে তারা প্রার্থী হয়েছেন। আর বিএনপির সিনিয়র নেতারা বলছেন, বহিষ্কারাদেশের ফলে দলের শৃঙ্খলাবোধ আরও দৃঢ় হয়েছে।

জানা যায়, খুলনা মহানগর বিএনপিতে নেতৃত্বের বিভেদ বেশ পুরনো। ২০২১ সালের ৯ ডিসেম্বর দলের প্রভাবশালী সভাপতি নজরুল ইসলাম মঞ্জুকে সরিয়ে নগর আহ্বায়ক করা হয় জেলা বিএনপি সাবেক সভাপতি শফিকুল আলম মনাকে। সেই থেকে মহানগর বিএনপিতে নেতৃত্বে দুটি ধারা চলে আসছে। সর্বশেষ গতকাল ৪ জুন খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি) নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় বিএনপির ৯ জন নেতাকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, বিএনপি এ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। অথচ ব্যক্তিস্বার্থ চিন্তা করে এ সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করা হয়েছে। যা বিশৃঙ্খলা তৈরি করেছে। তবে বহিষ্কৃত নেতা খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আশফাকুর রহমান কাকন বলেন, দলের স্বার্থ আর জনগণের স্বার্থ দুটির মধ্যে একটা সমন্বয় আছে, সেখানেই আমার অবস্থান। দল এখন আমাকে যে অবস্থানের মধ্যে ফেলেছে সেখান থেকে দলকে স্যালুট জানাই। আর যেখানে ফেলেছে সেখানেই জনগণ। এই জনগণের চাহিদা পূরণ করতেই জনগণ আমাকে স্যালুট দেবে বলে আমি মনে করি। আমি দলের সঙ্গে আছি, থাকব।  তবে ২২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর প্রার্থী মহানগর বিএনপির সাবেক যুগ্ম সম্পাদক মাহবুব কায়সার বলেন, ‘আপনি এমপি হবেন আপনার স্বার্থটা আপনি বুঝে নিলেন কিন্তু যারা কাউন্সিলর হবেন তাদের স্বার্থটা কেন ত্যাগ করতে হবে। আমরা যারা ছোট পরিসরে কাজ করি জনগণের জন্য ঝুঁকি নিয়ে অনেক কিছু করতে হয়। অনেক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। এই চেয়ার অনেক বেশি লাভজনক না। জনগণ আমাকে ভালোবাসে। তারা দাবি করেছে তাদের কথা ভেবে নির্বাচনে দাঁড়াতে হবে। আমি তাদের কথা রেখেই প্রার্থী হয়েছি। আর মহানগর বিএনপির সিনিয়র নেতারা বলছেন, বহিষ্কারাদেশের ফলে দলের শৃঙ্খলাবোধ আরও দৃঢ় হয়েছে। মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিন বলছেন, একটা অবৈধ সরকারের বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন করছি। সব দল মতের মানুষ এক জায়গায় হয়ে একাট্টা হয়েছে। সেখানে সিটি নির্বাচনে কে কাউন্সিরর হলেন, কে মেয়র হলেন এটা আমাদের দেখার বিষয় না। বহিষ্কৃতার হচ্ছেন- মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শেখ সাজ্জাদ হোসেন তোতন, আশফাকুর রহমান কাকন, সাবেক যুগ্ম-সম্পাদক মো. মাহবুব কায়সার, ৩০ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপি কর্মী ও সাবেক কাউন্সিলর মুহা. আমানউল্লাহ আমান, সংরক্ষিত ৯ নম্বর ওয়ার্ডে মহানগর বিএনপির সাবেক মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মাজেদা খাতুন, ৯ নম্বর ওয়ার্ডে কাজী ফজলুল কবির টিটো ও ১৪ নম্বর ওয়ার্ডে মুশফিকুস সালেহীন পাইলট, মহানগর তাঁতী দলের যুগ্ম আহ্বায়ক দেলোয়ার মাতুব্বর, সাবেক ছাত্রদল নেতা ইমরান হোসেন।

সর্বশেষ খবর