স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে বের হওয়ার পরও বাংলাদেশসহ বিভিন্ন দেশ একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) সাধারণ পরিষদের সভায় এলডিসি উত্তরণের পথে থাকা দেশগুলোর জন্য সহযোগিতা সম্প্রসারণে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার ১৩তম সম্মেলনের প্রস্তুতি সভায় এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
২০২৬ সালে এলডিসি থেকে বাংলাদেশের বের হওয়ার সময়সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরপর বাংলাদেশ আর শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা পাবে না। তাই এলডিসির পক্ষ থেকে ডব্লিউটিওতে দেওয়া শুল্কমুক্ত বাণিজ্য সুবিধার প্রস্তাবটি বাংলাদেশের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এলডিসিভুক্ত দেশগুলো উন্নত বিশ্বে শুল্ক ও কোটার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত বাজার সুবিধা পায়। আবার বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার নিয়ম পালনের ক্ষেত্রেও তারা কিছুটা ছাড় পায়। যদিও ডব্লিউটিও এই সম্প্রসারিত সুবিধা কত দিনের জন্য হবে, সে ব্যাপারে নির্দিষ্ট সময়সীমা উল্লেখ করেনি। কোনো দেশ জাতিসংঘের কিছু নির্দিষ্ট উন্নয়নের মানদন্ড পূরণ করলে বিশেষ সুবিধা পাওয়ার কথা নয়। নিয়ম অনুসারে, ২০২৬ সালে এলডিসি উত্তরণের পরে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ছাড়া অন্যান্য অঞ্চলে বাংলাদেশের শুল্ক ও কোটামুক্ত বাজার সুবিধা হারানোর কথা ছিল। এখন নতুন সিদ্ধান্তের ফলে বাংলাদেশ (এলডিসি) উত্তরণ পরবর্তী ধাপে কিছু সময়ের জন্য শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে। সোমবার অনুষ্ঠিত সভায় বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মহাপরিচালক এনগোজি ওকোনজো-ইওয়ালা বলেন, স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) তালিকা থেকে উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে কাজ করবে এ সিদ্ধান্ত। ফলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়ন অগ্রগতির কোনো ক্ষতি ছাড়াই এসব দেশ এলডিসি উত্তরণের দিকে যেতে পারবে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার এলডিসি গ্রুপের সমন্বয়কারী ও জিবুতির রাষ্ট্রদূত কাদরা আহমেদ হাসান বলেন, এ সিদ্ধান্তটি দেশগুলোকে বহুপক্ষীয় বাণিজ্য ব্যবস্থায় একীভূত হওয়ার জন্য আত্মবিশ্বাস বাড়াবে। বিশ্বে বর্তমানে ৪৬টি স্বল্পোন্নত দেশ রয়েছে। তাদের মধ্যে ১৬টি দেশ (এলডিসি) উত্তরণ প্রক্রিয়ার বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে। এর মধ্যে ডব্লিউটিওর সদস্য দেশ ১০টি। এগুলো হলো- বাংলাদেশ, অ্যাঙ্গোলা, কম্বোডিয়া, জিবুতি, লাওস, মিয়ানমার, নেপাল, সেনেগাল, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ ও জাম্বিয়া। বাকি দেশগুলোর মধ্যে চারটি (ডব্লিউটিও)তে নিজেদের প্রবেশের শর্তাবলী নিয়ে আলোচনা করছে। এগুলো হলো ভুটান, কমোরোস, সাও টোমে অ্যান্ড প্রিন্সেপ ও পূর্ব তিমুর। এ ছাড়া এলডিসি উত্তরণের পথে থাকা অন্য দুটি দেশ হলো কিরিবাতি ও টুভালু।
