সংস্কার কার্যক্রমের আইনি বৈধতা নেওয়ার জন্য জাতীয় নির্বাচনের আগে গণভোট চেয়েছে গণঅধিকার পরিষদ। দলটি জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবিত জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি), একজন সর্বোচ্চ দুবার প্রধানমন্ত্রীসহ মৌলিক প্রস্তাবে একমত। তবে দলটি নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের ক্ষেত্রে তিন-চার বছর সক্রিয় কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের সুপারিশ করেছে। গতকাল জাতীয় সংসদের এলডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপ করে গণঅধিকার পরিষদ। গণঅধিকার পরিষদের ১০ সদস্যের প্রতিনিধিদল অংশ নেয়।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার ও ড. ইফতেখারুজ্জামান। সংস্কার প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের বিষয়ে দলের নেতারা বলেন, ‘ভবিষ্যতে যেন কেউ সংস্কার কিংবা জাতীয় সনদকে আইনি বা কোনোভাবে চ্যালেঞ্জ করতে না পারে, বাতিল করতে না পারে, সেজন্য আমরা বলেছি যে, এর পক্ষে গণভোট করতে।’ গণভোটের পরে জাতীয় নির্বাচনের আশা করে দলটি। সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবিত জাতীয় সাংবিধানিক কাউন্সিল (এনসিসি) ধারণার সঙ্গে গণঅধিকার পরিষদ একমত বলে জানিয়েছে। এ ক্ষেত্রে কাউন্সিলের পরিবর্তে পরিষদ নাম দেওয়ার প্রস্তাব করে দলটি। তবে ইংরেজি নামের ক্ষেত্রে দলটি একমত। এনসিসিকে কার্যকর করার বিষয়ে দলটির নেতারা জানায়, সুপারিশে বলা আছে এনসিসি প্রধান বিচারপতি, অ্যাটর্নি জেনারেল, তিন বাহিনী প্রধান ও প্রধান উপদেষ্টার নিয়োগ দেবে। আমরা বলেছি প্রধান উপদেষ্টার পাশাপাশি অন্যান্য ১৫ কিংবা ২০ সদস্যের উপদেষ্টা পরিষদ এনসিসির সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে হবে। পাশাপাশি পুলিশপ্রধানের নিয়োগও এনসিসির মাধ্যমে করার সুপারিশ করে গণঅধিকার পরিষদ। সংবিধানের মূলনীতিতে বহুত্ববাদের প্রস্তাব করেছে কমিশন। দলটি বহুত্ববাদের বদলে ‘ধর্মীয় সম্প্রীতি’ যুক্ত করার প্রস্তাব দিয়েছে। সংসদের মেয়াদ চার বছর, সংসদ সদস্য নির্বাচন করার ক্ষেত্রে ২৩ বছর বয়স করার প্রস্তাব করেছে গণঅধিকার পরিষদ। সংবিধান সংশোধন করার ক্ষেত্রে উভয় কক্ষের দুই-তৃতীয়াংশের সমর্থন ছাড়াও গুরুত্ব অনুচ্ছেদগুলো (চিহ্নিত করা) সংশোধনের ক্ষেত্রে গণভোট হতে পারে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের মেয়াদ চার মাস মেয়াদি করার প্রস্তাব করেছে দলটি। স্থানীয় সরকার কমিশন গঠন প্রস্তাবের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে গণঅধিকার পরিষদ। দ্বিকক্ষের সংসদে একমত দলটি। একজন সর্বোচ্চ দুবার প্রধানমন্ত্রী হতে পারবেন সংবিধান সংস্কার কমিশনের এমন প্রস্তাবে দলটি একমত। দুবার প্রধানমন্ত্রী হওয়া ব্যক্তি পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি পদে অযোগ্য বলেও মত দিয়েছে গণঅধিকার পরিষদ।