দীর্ঘ ছুটি শেষে আবারও স্বরূপে ফিরছে রাজধানী। ফাঁকা রাস্তাঘাট, নীরব শহর, নিঃসাড় সকালের পর আবারও দেখা মিলছে কর্মমুখর ঢাকার। সকাল হতেই রাস্তায় দেখা গেছে মানুষের ভিড়, গাড়ির সারি, যানজট আর গন্তব্যে পৌঁছানোর তাড়াহুড়া। ঢাকার প্রতিটি এলাকায় যেন আবারও ছন্দ ফিরে এসেছে। গাবতলী, মহাখালী, যাত্রাবাড়ী-সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল, সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল, কমলাপুর রেল স্টেশনসহ সব জায়গায় গতকালও ছিল ঢাকায় ফেরার মানুষের ভিড়। উত্তরাঞ্চল থেকে আসা যাত্রীদের দীর্ঘ ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। দীর্ঘ ১০ দিন বন্ধ থাকার পর প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয় খুললেও গতকাল সেখানে বিরাজ করেছে ঈদের আমেজ।
সরেজমিনে গতকাল সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে দেখা গেছে- কর্মব্যস্ত নগরীর প্রথম প্রহরেই নির্মল জীবন কাটিয়ে ব্যস্ততার নগরীতে শুরু হয়ে গেছে জীবন সংগ্রাম, কেউ পাড়াপাড়ি করে বাসের ওঠার চেষ্টায় আছেন আর অনেকে তো উঠে কোনোমতে ঝুলে আছেন। শুরুর কর্মদিবসে নগরীতে তেমন যানজট চোখে না পড়লেও অনেক রুটেই ছিল ব্যস্ততা, আবার কিছু পরিবহনে স্বাচ্ছন্দ্যেই যাত্রা করেছেন কর্মজীবী মানুষ। ট্রাফিক পুলিশ বলছে, আগামী সপ্তাহ থেকে স্বরূপে ফিরবে রাজধানী।
দীর্ঘ ছুটি শেষে বেশির ভাগ মানুষই ফিরেছেন নগরীতে, সকাল থেকে নগরীর সব রাস্তাঘাটে তাদের কর্মচাঞ্চল্যও চোখে পড়ে। অফিসগুলোর লিফটেও দেখা গেছে দীর্ঘ লাইন। সকালে ব্যাংকপাড়া খ্যাত মতিঝিলের দিলকুশার ব্যাংকগুলোতে ভিড় দেখা গেছে। তবে কর্মকর্তা-কর্মচারীর মধ্যে অনেকটা উৎসবের আমেজেই কাজ করে যাচ্ছেন কর্মীরা।
অন্যদিকে সচিবালয়ে সরেজমিনে দেখা যায়, প্রথম কর্মদিবসে কর্মকর্তা কর্মচারীরা কর্মস্থলে ফিরে সহকর্মীদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাধ্যমে কর্মদিবস শুরু করেছেন। অফিসে এসে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একে অন্যের সঙ্গে কোলাকুলি ও গল্প করছেন। গতকাল উত্তরবঙ্গ থেকে ছেড়ে আসা বাস ও ট্রেনে ব্যাপক ভিড় দেখা গেছে। আসন না পেয়ে অনেক যাত্রী ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনের ছাদে উঠেছেন। অতিরিক্ত যাত্রীর চাপে ট্রেনগুলো নির্ধারিত সময়ের চেয়ে দেরিতে কমলাপুর স্টেশনে পৌঁছেছে। ফলে বাড়তি ভোগান্তি নিয়ে ঢাকায় ফিরছেন যাত্রীরা।
সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালেও ঢাকামুখী মানুষের কিছুটা ভিড় দেখা গেছে। তবে পদ্মা সেতু পরবর্তী সময়ে পাল্টে গেছে সদরঘাটের চিত্র। ঈদের আগে সেভাবে এখন দেখা মেলে না আগের মতো মানুষের ভিড়। ঈদ-পরবর্তী সময়েও নেই ঢাকামুখী মানুষের চাপ। কারণ অধিকাংশ মানুষ এখন পদ্মা সেতু হয়ে বরিশাল, পটুয়াখালী, শরীয়তপুরসহ যেসব জেলায় আগে নৌ-পথে যাতায়াত করতেন এখন সড়কপথে সেসব পথ পাড়ি দিচ্ছেন। তবে চাঁদপুর, ভোলাসহ কয়েকটি জেলার নিয়মিত যাত্রী এখনো লঞ্চ যাত্রার ওপর ভরসা করেন। সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল হয়ে ঢাকা-চাঁদপুর, ঢাকা-পটুয়াখালী রুটের যাত্রীদের ঢাকায় প্রবেশ করতে দেখা গেছে। বরিশাল থেকে সদরঘাটে আসা যাত্রী আল ফারুক আহমেদ বলেন, পরিবারসহ নদীপথে যাত্রা আরামদায়ক। আয়েশি কায়দায় লঞ্চে আসা যায়। এজন্য নৌপথেই এসেছি। সদরঘাটে ব্যবস্থাপনা এখন বেশ ভালো।