মানুষের জীবনে সামাজিক সম্পর্কের গুরুত্ব শুধু মানসিক শান্তির জন্য নয়, বরং এটি স্বাস্থ্যরক্ষা ও দীর্ঘ জীবনযাপনের অন্যতম শর্ত। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা তাদের সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, দৃঢ় সামাজিক সংযোগ রোগ প্রতিরোধ ও সুস্থ জীবনের সঙ্গেও সম্পর্কিত।
গবেষণা বলছে, ইতিবাচক সামাজিক সম্পর্ক মস্তিষ্কের কোর্টিকোস্ট্রিয়াটাল সার্কিট দ্বারা প্রক্রিয়াজাত হয়। যা মানুষকে পুরস্কার অর্জন ও লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য উৎসাহিত করে। সেজন্য অন্যের প্রশংসা বা হাসি মানুষের জন্য পুরস্কারের মতো কাজ করে। মস্তিষ্কে ডোপামিন হরমোন মুক্ত করে আনন্দ ও সুখের অনুভূতি তৈরি করে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কমিশনের ড. বিবেক মূর্তি বলেন, শক্তিশালী সামাজিক সংযোগ স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও অর্থনৈতিক ফলাফলের ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। ব্যক্তির জীবনে নিরাপত্তা, মানসিক সমর্থন ও সামাজিক সহায়তা নিশ্চিত করে।
গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত পরিবার, বন্ধু বা সম্প্রদায়ের সঙ্গে সংযুক্ত থাকেন, তারা মানসিক চাপ কম অনুভব করেন। তাদের আয়ু বাড়ে, জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সামাজিক সম্পর্ক গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি কমাতে পারে, মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে পারে। এটি সামাজিক কাঠামোকেও শক্তিশালী করে।
বিপরীতে, একাকীত্ব বা সামাজিক বিচ্ছিন্নতা স্ট্রোক, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস ও অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ায়। এটি মানসিক স্বাস্থ্যের ওপরও প্রভাব ফেলে, যারা একাকীত্বে ভোগেন তাদের হতাশায় আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা দ্বিগুণ। একাকীত্ব আত্মহত্যার চিন্তাভাবনার দিকেও পরিচালিত করতে পারে।
বিভিন্ন কারণে মানুষ সামাজিক বিচ্ছিন্ন হতে পারে। তার মধ্যে রয়েছে দুর্বল স্বাস্থ্য, নিম্নআয় ও শিক্ষা, একা জীবনযাপন পদ্ধতি, জননীতি ও ডিজিটাল প্রযুক্তি। প্রতিবেদনে তরুণদের মানসিক স্বাস্থ্যে অতিরিক্ত স্ক্রিন টাইমের বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বনে জোর দেওয়া হয়।
সূত্র: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা