জলবায়ুর বিরুপ প্রভাবে বিশ্বে প্রতিনিয়ত বাড়ছে তাপমাত্রার হার। ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার বৃদ্ধির কারণে বিশ্বে প্রতি মিনিটে একজনের মৃত্যু হচ্ছে।
জলাবায়ু সংকটের স্বাস্থ্যগত প্রভাবে নিয়ে ল্যানসেট কাউন্টডাউন অন হেলথ অ্যান্ড ক্লাইমেট চেঞ্জ ২০২৫ এর প্রতিবেদনে এমনই ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর বিশ্বের নেশার মতো নির্ভরতা শুধু জলবায়ুকে নয়, মানুষের জীবন ও স্বাস্থ্যকেও বিপর্যস্ত করছে।
বিষাক্ত বায়ুদূষণ, দাবানল, ডেঙ্গুর মতো সংক্রামক রোগের বিস্তার এবং চরম তাপপ্রবাহে কারণে প্রতি বছর লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু ঘটছে। ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডন (ইউসিএল), বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিওএইচও) এবং ৭০টিরও বেশি একাডেমিক ও জাতিসংঘ সংস্থার ১২৮ জন বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে এই গবেষণামূলক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়েছে।
গবেষণার তথ্য মতে, ২০১২ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে গড় হিসাবে প্রতি বছর ৫ লাখ ৪৬ হাজার মানুষ তাপমাত্রা বৃদ্ধিজনিত কারণে মারা গেছে, যা প্রতি মিনিটে একজন মৃত্যুর সমান। ১৯৯০-এর দশকের তুলনায় এই মৃত্যুহার ২৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, গত চার বছরে গড়ে একজন মানুষ বছরে ১৯ দিন প্রাণঘাতী তাপে আক্রান্ত হয়েছেন। উচ্চ তাপমাত্রার কারণে ২০২৪ সালে ৬৩৯ বিলিয়ন শ্রমঘণ্টা নষ্ট হয়েছে, যা অনুন্নত দেশগুলোর মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রায় ৬ শতাংশ ক্ষতিসাধন করেছে।
গবেষকরা জানান, ২০২৩ সালে বিশ্বজুড়ে সরকারগুলো জীবাশ্ম জ্বালানি কোম্পানিগুলো ভর্তুকী হিসেবে ২.৫ বিলিয়ন ডলার দিয়েছে। অন্যদিকে তীব্র তাপমাত্রার কারণে কৃষক ও নির্মাণ শ্রমিকরা খামার বা কর্মক্ষেত্রে কাজ না পারায় বিশ্ব প্রায় সমপরিাণ অর্থনৈতিক ক্ষতির শিকার হয়েছে।
এ গবেষণায় নেতৃত্ব দেওয়া ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের (ইউসিএল) গবেষক ড. মারিনা রোমানেলো বলেন, এই প্রতিবেদনটি এক নির্মম বাস্তবতা তুলে ধরেছে। বৈশ্বিক উষ্ণতার জন্য বিশ্বজুড়ে স্বাস্থ্য ও জীবিকা ধ্বংস হচ্ছে। যতদিন আমরা জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরতা না কমাব, ততদিন এ ধ্বংস অব্যাহত থাকবে।
বিডি প্রতিদিন/কামাল