আগামী ১০ ডিসেম্বর বিএনপির ঢাকা বিভাগীয় সমাবেশকে কেন্দ্র করে দলটি কোনো ‘অঘটন’ ঘটালে ছাড় দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পবিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেছেন, ‘তারা ঢাকা দখল করতে চায়, কত বড় সাহস। আমরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ললিপপ খাবো না। শেখ হাসিনা আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় পান না।’
শনিবার বিকালে ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাসের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনের সঞ্চালনায় সম্মেলনের উদ্বোধন করেন ছাত্রলীগ সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়।
সমাবেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ভয় পায় আপনাদের আগুন, সন্ত্রাস, লাঠি নিয়ে খেলাধুলা। সেই বদ মতলব আপনাদের আছে। খবর পেলাম বিএনপি নেতাকর্মীরা হাড়ি-পাতিল, লোটা-কম্বল নিয়ে তাবু গেড়েছে। কেন? আমরা তো পরিবহন বন্ধ করতে বলিনি। ৬ তারিখ ছাত্রলীগের সম্মেলন। ছাত্রলীগ আপনাদের ধারের কাছেও যাবে না।’
‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রঙিন খোয়াব দেখে লাভ নেই’, উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সংবিধানকে অনেক কচুকাটা করা হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার আর ফিরে আসবে না।’
বিএনপির সমাবেশের স্থান প্রসঙ্গে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সোহরাওয়াদী উদ্যানে বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণ দিয়েছিলেন। এখানেই পাক হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পণ করেছিলো। অথচ সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ফখরুলের পছন্দ নয়। তিনি চান পল্টন, ৩৫ হাজার স্কয়ার ফিট। অথচ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বেগম জিয়া গত নির্বাচনেও সভা করেছেন। ফখরুলের কেন পছন্দ নয়? স্বাধীনতা মুক্তিযুদ্ধের বিশ্বাস তার নাই, আবারও প্রমাণ দিলেন। এজন্য সোহরাওয়ার্দী আপনাদের পছন্দ নয়।’
তিনি বলেন, এটা (সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ওনাদের জন্য খাঁচা। আর পল্টনের সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ওনাদের জন্য ভালো। কেন ভালো সেটা আমরা জানি। লাঠি, বোমা নিয়ে আসবেন, এজন্য এটা ভালো।’
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয়, ঢাকা মহানগর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কমিটি একসঙ্গে ঘোষণা করা হবে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা সিভি নিচ্ছি। যোগ্যতার ভিত্তিতে নেতৃত্ব আসবে। সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’
এর আগে, বিকাল তিনটায় জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে বার্ষিক সম্মেলন শুরু হয়। এসময় উদ্বোধনী বক্তব্যে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান বলেন, ‘ছাত্রলীগ সন্ত্রাস, মাদকমুক্ত নিরাপদ ক্যাম্পাস গড়ে তুলতে কাজ করে যাচ্ছে। শিক্ষাঙ্গনে ছাত্রদল বা অন্য কেউ অরাজকতা সৃষ্টি করতে চাইলে তাদের দাঁতভাঙা জবাব দিতে ছাত্রলীগ প্রস্তুত আছে।’
প্রধান বক্তার বক্তব্যে সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য বলেন, ‘মহামারি করোনায় ছাত্রলীগ কর্মীরা ছাত্রলীগের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করে জনগণের সেবায় তথা দেশরত্ন শেখ হাসিনার সেবায় কাজ করেছেন। সেজন্য ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে আপনাদের ধন্যবাদ জানাই।’
সনজিত চন্দ্র দাস বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ছাত্রলীগের দায়িত্ব পালন করেছি। আমাদের যেসব দোষ-ত্রুটি ও ব্যর্থতার দায়, তা আমরা নিজের কাঁধে তুলে নিচ্ছি।’
উল্লেখ্য, ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী প্রতি বছর সম্মেলন হওয়ার কথা থাকলেও তা হলো প্রায় চার বছর পর।
সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের পদ পেতে সিভি জমা দিয়েছেন ২৪৬ জন
এদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পদ পেতে ২৪৬ জন তাদের জীবন বৃত্তান্ত জমা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ নেতৃত্বে আসার আলোচনায় আছেন কেন্দ্রীয় উপ-প্রচার সম্পাদক রায়হান রনি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সবুজ, মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাসিবুল হাসান শান্ত, শহীদুল্লাহ হল ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, বঙ্গবন্ধু হলের সভাপতি মেহেদী হাসান শান্ত ও এফ রহমান ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম, ঢাবি শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক জহিরুল ইসলাম। নারীদের মধ্যে রয়েছেন ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি তিলোত্তমা শিকদার ও ফরিদা পারভীন এবং মুক্তিযুদ্ধ ও গবেষণা উপ-সম্পাদক রনক জাহান রাইন।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ