নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলার আহম্মেদপুরে সংখ্যালঘু এনজিও কর্মীকে (৩২) গণধর্ষণের ঘটনায় তিন যুবলীগ কর্মীর মধ্যে দুইজনকে মাত্র ২০ হাজার জরিমানা করা হয়েছে। অপর একজনকে কোন ধরণের শাস্তির মুখোমুখি করা হয়নি।
স্থানীয় সরকারদলীয় নেতাকর্মীরা মেয়েটিকে মামলা করার সুযোগ না দিয়ে এভাবে নামকাওয়াস্তে বিচার করায় এলাকাবাসীর মধ্যে দারুণ ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
এলাকাবাসী ও ধর্ষিতার স্বজনেরা জানান, রবিবার রাত ৮টার দিকে অত্যন্ত গোপনীয়তার সঙ্গে কারবালা গ্রাম উন্নয়ন কেন্দ্রের (এনজিও) কার্যালয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠণিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুজ্জামান, জোয়াড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সেক্রেটারী আব্দুর রাজ্জাক, কারবালা গ্রাম উন্নয়ন কেন্দ্রের নির্বাহী পরিচালক আশরাফুল ইসলাম এবং সমতা সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির নির্বাহী পরিচালক তসলিমউদ্দিনের উপস্থিতিতে ঘরোয়া মিটিংয়ের মাধ্যমে বিষয়টির সমাধান করা হয়।
সেখানে ধর্ষক রাব্বী ও আরিফকে মাত্র ২০ হাজার টাকা জরিমানা ও চড়-থাপ্পড় মেরে ছেড়ে দেয়া হয়। একই সাথে মেয়েটি কোন মামলা-মোকদ্দমা করবে না মর্মে মৌখিক স্বীকৃতি নেয়া হয়। তার আগে সকাল থেকে মেয়েটিকে থানায় যেতে না দিয়ে তসলিমউদ্দিনের বাড়িতে রেখে দেয়া হয় বলে জানা গেছে।
এ ব্যাপারে মেয়েটির শ্বশুর বলেন, আমার বৌমাকে খবর দিয়ে নিয়ে গিয়ে সারাদিন রেখে রাত ৯টার দিকে ২০ হাজার টাকা দিয়ে বাসে তুলে পাঠিয়ে দেয়। সেখানে বড় বড় নেতারা আপোষ করে দিয়েছে। এখন আমরা মামলা করলে মেয়েটির চাকুরী চলে যাবে। তাছাড়া আমরা হিন্দু মানুষ। তাই থানায় যাইনি।
এ ব্যাপারে আপোষের ড়্গেত্রে ভূমিকা রাখা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুজ্জামানের কাছে জানতে চাইলে এসব বিষয়ে তিনি কোন কথা বলতে রাজি হননি।
নাটোরের পুলিশ সুপার বাসুদেব বণিক বলেন, বিষয়টি শুনেছি। ভিকটিম আবেদন করলে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেবো।
প্রসঙ্গত, শনিবার রাতে আহম্মেদপুর সমতা সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতির সংখ্যালঘু মাঠকর্মীকে (৩২) উপজেলার কায়েমকোলা গ্রামের জামালউদ্দিনের ছেলে রাব্বী (৩৫), আব্দুল জাব্বারের ছেলে আরিফ (৩৪) ও অজ্ঞাত পরিচয়ের অপর একজন (৩৫) মিলে উপর্যুপরি ধর্ষণ করে।