১৭ মে, ২০১৬ ২০:১৭
সিরিয়াল কিলার জেরি ব্রাডোস

নারীর লেস বসানো অন্তর্বাসে ছিল যার আকর্ষণ!

অনলাইন ডেস্ক

নারীর লেস বসানো অন্তর্বাসে ছিল যার আকর্ষণ!

এমন কিছু অপরাধী আছেন যাদের নাম জীবিত অবস্থায় যেমন মানুষকে শিহরিত করে, তেমনি মৃত্যুর পরও আতঙ্কিত করে তোলে মানুষকে। বিশ্বের অপরাধ জগতে কুখ্যাত অপরাধীদের তালিকায় থাকা তেমনি একটি নাম জেরি ব্রাডোস। শৈশব থেকেই মেয়েদের হাই হিল জুতো আর লেস বসানো অন্তর্বাসের প্রতি ছিল তার তীব্র আকর্ষণ। 

জেরির জন্ম আমেরিকার ডাকোটায়। তার বয়স তখন মাত্র পাঁচ। একদিন ক্লাস টিচারের জুতো চুরি করতেন জেরি। পরবর্তীতে জুতোর সঙ্গে আরেকটি জিনিস যুক্ত হয়। আর তা হলো মেয়েদের অন্তর্বাস। ধীরে ধীরে হাই হিল জুতো আর লেস বসানো অন্তর্বাস চুরি করা তার নেশা হয়ে দাঁড়ায়। প্রতিবেশিদের বারান্দার দড়িতে ঝুলতে থাকা ভিজে জামাকাপড় থেকে বেছে বেছে লেস বসানো অন্তর্বাস চুরি করতেন জেরি। 

সতেরো বছর বয়সে নিজের যৌন আকাঙ্ক্ষা মেটানোর দাবিতে এক তরুণীকে মারধর করেন জেরি। এমনকি প্রাণনাশের হুমকিও দেন ওই তরুণীকে। ওই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয় জেরিকে। ৯ মাস ধরে চলে তার মানসিক চিকিৎসা। কাউন্সিলিং করে চিকিৎসকরা জানতে পারেন, নিজের মা এবং সব নারীকে ঘৃণা করেন জেরি। সবার উপর তীব্র রাগ তার। প্রতিশোধের আগুন জ্বলে তার মনে। 

জেরির কেস স্টাডি থেকে মনোবিজ্ঞানীরা জানতে পারেন, জেরি ব্রাডোসের মায়ের স্বপ্ন ছিল কন্যাসন্তানের মা হওয়ার। কিন্তু দ্বিতীয় সন্তানও ছেলে হওয়ার পর ভেঙে পড়েন তিনি। দ্বিতীয় সন্তান মানে জেরির উপরই স্বপ্ন ভঙ্গের ক্রোধ ঝাড়তে থাকেন তিনি। মায়ের কাছ থেকে দুর্ব্যবহার পেয়ে আর চরম অবহেলায় বেড়ে উঠতে থাকেন জেরি। আর এটাই নারী জাতির প্রতি জেরির বিতৃষ্ণার কারণ। 

একসময় স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যান জেরি। একটি সংস্থায় ইলেকট্রিশিয়ানের চাকরি পান তিনি। ২২ বছর বয়সে ১৭ বছরের এক কিশোরীকে বিয়ে করে সংসারীও হন। বিয়ের পর জেরির মানসিক বিকারগ্রস্ততা পুনরায় ধরা পড়ে। স্ত্রীকে জেরি জানিয়ে দেন, সম্পূর্ণ বিবস্ত্র হয়ে বাড়ির সব কাজকর্ম করতে হবে। প্রথমদিকে স্বামীর এই নির্দেশকে ঠাট্টা বলে ধরে নেন তিনি। পরে যখন ভুল ভাঙে, নগ্ন অবস্থায় কাজ করতে বাধ্য হতেন জেরির স্ত্রী। আর ওই অবস্থায় স্ত্রীর ছবি তুলে রাখতেন। বিবাহিত জীবনে দুই সন্তানের পিতা হন জেরি। 

জেরির বাড়িতে একটা গ্যারেজ ছিল। ওইখানে কারও ঢোকার অনুমতি ছিল না। পরে জানা যায়, জেরির হাতে নিহত মেয়েদের দেহ লুকিয়ে রাখা হতো গ্যারেজে। পুলিশের হাতে ধরা পড়ার পর তদন্তে জেরি স্বীকার করেন, ১৯৬৮ থেকে ১৯৬৯, এক বছরে তিনি ৪ জন তরুণীকে খুন করেন। তার প্রথম শিকার ছিলেন ১৯ বছরের লিন্ডা। নিজের প্রথম খুনের স্মৃতি হিসেবে জেরি সংরক্ষণ করেছিলেন লিন্ডার স্তনযুগল যা তিনি ব্যবহার করতেন পেপারওয়েট হিসেবে! এ ছাড়াও তার সংগ্রহে ছিল লিন্ডার বাম পা। সেটা ছিল জেরির ‘মডেল’। জুতো চুরির পরে ওই পায়ে পরিয়ে দেখতেন কেমন লাগছে! আরও চমকপ্রদ তথ্য হলো চুরি করা জুতোর ক্যাটালগ ছিল জেরির কাছে। খুনের পরে ওই জুতো পরেই স্বমেহন করতেন তিনি। তারপর সম্ভোগে লিপ্ত হতেন মৃতদেহের সঙ্গে।

বিচারে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় জেরি ব্রাডোসের। পরে তিনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে পড়েন। ২০০৬ সালে কারাগারেই মৃত্যু হয় তার। 

 

বিডি-প্রতিদিন/ ১৭ মে, ২০১৬/ আফরোজ

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর