আটলান্টিক মহাসাগরের একটি বিশেষ অঞ্চলকে বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল বলে। এই অঞ্চলে এখনও পর্যন্ত যত রহস্যময় দুর্ঘটনা ঘটেছে তার ইয়াত্তা নেই। পৃথিবীর রহস্যময় অঞ্চলের তকমা জুটেছে এই অঞ্চলটির। স্থানীয় অধিবাসীরা এই অঞ্চলটিকে ড্রেভিলস ট্রায়াঙ্গেল বা শয়তানের ত্রিভুজ বলে থাকেন।
বারমুডা ট্রায়াঙ্গেল এলাকাটি আটলান্তিক মহাসাগরের তিন প্রান্ত দিয়ে সীমাবদ্ধ। বারমুডা ট্রায়ঙ্গালের তিনটি প্রান্তের একটি প্রান্ত আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা আরেক প্রান্ত পুয়ের্তো রিকো। অন্য প্রান্তটি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বারমুডা দ্বীপের সঙ্গে যুক্ত। মোট আয়তন ১১৪ লাখ বর্গ কিলোমিটার অর্থাত্ ৪৪ লাখ বর্গ মাইল। এই বিশাল অঞ্চলে কত জাহাজ, বিমান নিরুদ্দেশ হয়েছে তার ইয়াত্তা নেই। কোনও জাহাজ এই অঞ্চলের গভীরে প্রবেশ করলেই বেতার তরঙ্গ আর পাঠাতে পারে না। ফলে উপকূলের সঙ্গে যোগাযোগ থাকেনা। এক সময়ে দিক নির্ণয় করতে না পেরে রহস্যজনক ভাবে অদৃশ্য হয়ে যায়। তাই এই অঞ্চলটিকে রেডিও ডেড স্পটও বলে।
খোদ কলম্বাস ১৪৯২ সালের ১১ই অক্টোবর তার লগবুকে এই ট্রায়াঙ্গেল নিয়ে অভিজ্ঞতার কথা লেখেন। বারমুডা ট্রায়াঙ্গেলের রহস্যভেদ করার জন্য অনেকগুলি তত্ত্ব দাঁড় করানো হয়েছিল। অনেকের মতে এখানে চুম্বকীয় তত্ত্ব কাজ করে। তাদের মতে আকাশ ও সমুদ্রের মধ্যে এখানে তড়িতাহত ক্রিয়া বিক্রিয়া ঘটে। যার ফলেই দুর্ঘটনা। কেউ বলেন এই ট্রায়াঙ্গেল এলাকায় ভূমিকম্পের জন্য পাহাড়সম বিশালি ঢেউ তৈরি হয়। তাতেই দুর্ঘটনা। আবার অনেকের মতে ট্রায়াঙ্গেল অঞ্চলে সমুদ্র ভূপৃষ্টে রয়েছে এক অনন্ত ফাটল। সেখানে হারিয়ে যায় জাহাজ।
তবে এই সব তত্ত্বকে উড়িয়ে বিজ্ঞানীরা এক নতুন তত্ত্ব দিয়েছেন। তাদের দাবি বারমুডা রহস্যের পেছনে রয়েছে ষড়ভূজাকৃতি মেঘ। আটলান্টিক মহাসাগরের বারমুডা দ্বীপের কাছে প্রায় পঞ্চাশ মাইল এলাকা জুড়ে রয়েছে এই মেঘ। যার গতি ঘণ্টায় ১৭০ মাইল। এই মেঘের ঝড়েই যাবতীয় দুর্ঘটনা।
বিডি প্রতিদিন/২৪ অক্টোবর, ২০১৬/ফারজানা