বহুল আলোচিত পদ্মাসেতু দুর্নীতি ষড়যন্ত্র মামলায় বাংলাদেশের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ স্থগিত করে দিয়েছে কানাডার একটি আদালত। অন্টারিও সুপরিয়ির কোর্ট অজ জাস্টিসের আদালতের বিচারপতি জে নর্ডহেইমার এক আদেশে বলেছেন, অভিযুক্তের (আবুল হাসান চৌধুরী) ওপর কানাডার কোনো ধরনের কর্তৃত্ব নেই এবং আজ পর্যন্ত কানাডা সরকার কোনো কর্তৃত্ব অর্জনের চেষ্টাও করেনি। এইসব বিবেচনায় তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ স্থগিত করা হলো।
আদালত বলেন, ভবিষ্যতে কখনো কানাডা অভিযুক্তের ওপর এখতিয়ার (জুরিসডিকশন) প্রতিষ্ঠা করতে পারলে প্রসিকিউশন আদালতের এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
কানাডার আদালতের এই সিদ্ধান্তের ফলে সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী আপাতত: পদ্মাসেতু দুর্নীতি ষড়যন্ত্র মামলার কার্যক্রম থেকে অব্যহতি পেলেন। তবে কেভিন ওয়ালেস, রমেশ শাহ এবং মোহাম্মদ ইসমাইলের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিচার কাজ যথারীতি চলবে। আগামী ১১ জুন তাদের প্রাক-বিচার শুনানির নতুন তারিখ নির্ধারিত হয়েছে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের পদ্মাসেতু প্রকল্পের কাজ কানাডিয়ান কোম্পানি এসএনসি লাভালিনকে পাইয়ে দিতে উৎকোচ দেওয়ার ষড়যন্ত্রের অভিযোগে কানাডার আদালতে দায়ের করা মামলায় অন্যান্যের সাথে আবুল হাসান চৌধুরীকেও অভিযুক্ত করা হয়। কিন্তু আবুল হাসান চৌধুরী কানাডিয়ান আইনজীবী ব্রায়ান গ্রীনস্পেনের মাধ্যমে কানাডিয়ান আদালতে কোনো বিদেশি নাগরিকের বিচারের এখতিয়ার চ্যালেঞ্জ করেন। আদালত উভয় পক্ষের যুক্তি তর্ক বক্তব্য শুনে সম্প্রতি বিচারক জে নর্ডহেইমার ২০ পাতার এক রায়ে আবুল হাসান চৌধুরীর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ স্থগিত করেন।
আদালতের রায়ে বলা হয়, আবুল হাসান চৌধুরী বাংলাদেশের নাগরিক। তিনি কানাডার নাগরিক নন, কিংবা কখনো কানাডার বাসিন্দাও ছিলেন না। তিনি কখনো কানাডায় এসেছেন তারও কোনো প্রমাণ নেই। আদালত বলেন, পদ্মাসেতু প্রকল্পের দুর্নীতি ষড়যন্ত্রের অনেক কিছুই কানাডায় ঘটেছে এবং অপরাধের ওপর কানাডা সরকারের পুরোপুরি কর্তৃত্ব (জুরিসডিকশন) আছে। কিন্তু উল্লেখিত অভিযুক্তের ওপর কানাডার কোনো জুরিসডিকশন নেই।
আদালত বলেন, প্রসিকিউশন অভিযুক্তকে (আবুল হাসান চৌধুরী) গ্রেফতারের জন্য কোনো অ্যারেষ্ট ওয়ারেন্ট চায়নি। বাংলাদেশ এবং কানাডার মধ্যে অপরাধী প্রত্যার্পন চুক্তিও নেই। কানাডা সরকার অভিযুক্তকে আত্মসমর্পনের জন্য বাংলাদেশ সরকারের সাথে কোনো ধরনের দেনদরবার করেছে তারও কোনো প্রমান নেই।