বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে ২০১৪-১৫ অর্থবছরে মোট জাতীয় বাজেটের ৪ দশমিক ৬ শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
আজ বিকেলে জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবুল মুহিত মোট ২ লাখ ৫০ হাজার ৫০৬ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেন। এর মধ্যে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে বরাদ্দ দেওয়া হয় ১১ হাজার ৫৪০ কোটি টাকা। যা মোট বাজেটের ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। এর মধ্যে উন্নয়ন খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ১১ হাজার ৪৯৬ কোটি টাকা এবং অনুন্নয়ন খাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৪ কোটি টাকা।
চলতি অর্থবছরে (২০১৩-১৪) এ খাতে মোট বরাদ্দ ছিল ১১ হাজার ৩৫১ কোটি টাকা।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বিদ্যুৎ উৎপাদনে আমাদের অগ্রগতির ধারা এ মেয়াদেও অব্যাহত থাকবে। আমাদের নেওয়া মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়িত হলে আগামী ৫ বছরে দেশের প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ২০২১ সালে মধ্যে ২০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা স্থির ছিল। ক্রমবর্ধমান চাহিদা ও আমাদের সক্ষমতার প্রেক্ষাপটে এ লক্ষ্যমাত্রা বর্তমানে ২৪ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত করা হয়েছে। এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে যে সব বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে চুক্তি হয়েছে তা ২০১৭ সালের মধ্যে উৎপাদনে যাবে। ২০১৭ সাল নাগাদ দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা ১৮ হাজার ১৬২ মেগাওয়াটে উন্নীত করা হবে।’
বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে বেশ কিছু বড় বিদ্যুৎ প্রকল্পের চিত্র তুলে ধরে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমানে দেশের প্রায় ৬৮ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয় প্রাকৃতিক গ্যাস থেকে। ২০১৭ সালের মধ্যে এক হাজার ৪২৬ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করা হবে। রূপপুরে নির্মাণ করা হবে দুই হাজার মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন দু’টি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র।
২০১৫ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য জ্বালানি হতে ৮শ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নবায়নযোগ্য জ্বালানির জন্য একটি বিশেষ তহবিল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এ তহবিলে এই বছরের বরাদ্দ নিয়ে মোট ৪শ কোটি টাকার কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। এ ছাড়া বিদ্যুৎ খাতে আরও কিছু পরিকল্পনার কথা তুলে ধরেন মন্ত্রী।’
অর্থমন্ত্রী তার বাজেট বক্তৃতায় প্রাকৃতিক গ্যাসের যুক্তিসঙ্গত উত্তোলন ও ব্যবহারের কথা জানিয়ে বলেন, ‘দেশীয় সংস্থা বাপেক্সের সক্ষমতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা হবে। নতুন গ্যাস ও তেলক্ষেত্র অনুসন্ধানে জোর দেওয়া হবে। জাতীয় স্বার্থ সমুন্নত রেখে সমুদ্র উপকূল ও গভীর সমুন্দ্রে গ্যাস ও তেল অনুসন্ধানে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে সহযোগিতার ক্ষেত্র সম্প্রসারণ করা হবে। পাশাপাশি ২০১৫-১৬ সাল নাগাদ মোট ২১টি কূপ খননের মাধ্যমে গ্যাসের উৎপাদন বাড়ানো হবে।’
গ্যাস ব্যবস্থাপনায় দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে অপচয় হ্রাসের উদ্যোগ নেওয়ার কথা জানিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘বিদেশ থেকে এলএনজি আমদানির প্রক্রিয়াও অব্যাহত থাকবে। এ জন্য মহেশখালেী দ্বীপে এলএনজি টার্মিনালসহ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো নির্মাণের বিষয়টি সরকারের সক্রিয় বিবেচনায় আছে।’