আমৃত্যু কারাদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর রায়ের প্রতিক্রিয়ায় তার ছেলে মাসুদ সাঈদী বলেছেন, 'আমাদের প্রত্যাশা ছিল বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আদালতে ন্যায়বিচার পাবো, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে তা পাইনি। এ রায়ে আমরা সন্তুষ্ট হতে পারিনি। আমার বাবা নির্দোষ। রাজনৈতিক কারণে তাকে ফাঁসানো হয়েছে।'
বুধবার সাঈদীর রায় ঘোষণার পর সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী ভবন ও ফেসবুকে দেয়া প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব কথা বলেন।
মাসুদ বলেন, 'এই মামলায় ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। অনিয়ম করা হয়েছে এই মামলার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত।'
ন্যায়বিচার কেন পায়নি ফেসবুকে তার ব্যাখ্যা দিয়ে মাসুদ সাঈদী বলেন, 'ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়নি এ কথাটি এ কারণে বলছি-এই মামলাটি হলো সেই মামলা, যে মামলায় হাজার বছরের বিচার বিভাগের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসকে কলঙ্কিত করে ‘স্কাইপ কেলেঙ্কারির’ মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটানো হয়েছে। এই মামলায় আদালত প্রাঙ্গণ থেকে আমাদের সাক্ষীকে অপহরণ করে ভারতে পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। এই মামলায় আমাদের বিরুদ্ধে মাসের পর মাস সাক্ষীদের তথাকথিত সেইফ হাউজে এনে ট্রেনিং দিয়ে আদালতে হাজির করা হতো। এই মামলায় আদালতে হাজির না করেই পুলিশের কাছে দেয়া ১৬ জন সাক্ষীর বক্তব্যকে ‘সাক্ষীর জবানবন্দী’ হিসেবে আদালত অন্যায়ভাবে গ্রহণ করেছে।'
তিনি আরো বলেন, 'সর্বোপরি এই মামলা হলো সেই মামলা, স্কাইপি কেলেঙ্কারি ফাঁস হলে জানা গেল যে মামলার চার্জশিটও বাংলাদেশের কোনো বিচারপতি তৈরি করেননি, যে চার্জের ওপর ভিত্তি করে আমার আব্বার বিরুদ্ধে তথাকথিত এই যুদ্ধাপরাধ মামলা পরিচালিত হয়েছে। সেই চার্জটি লিখে পঠিয়েছেন বেলজিয়াম প্রবাসী জাসদ নেতা জনৈক আহমেদ জিয়াউদ্দিন। এরকম একটি মামলায় আল্লামা সাঈদীর এক মিনিটের সাজাও ন্যায় প্রতিষ্ঠার অন্তরায়।'
মাসুদ সাইদী বলেন, 'পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি হাতে পাওয়ার পর রিভিউ আবেদন করা হবে। আশা করছি সর্বশেষ আইনি লড়াইয়ে বিজয় আমাদেরই হবে। ইনশাআল্লাহ। আমরা ন্যায় বিচার পাবো।'
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালে মানবতাবিরোধী অপরাধে ট্রাইব্যুনালের দেয়া মৃত্যুদণ্ডের সাজা কমিয়ে বুধবার সাঈদীকে আমৃত্যু কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আপিল বিভাগ।